কোনো ব্যবসায়িক কিংবা উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা বা কোনো উদ্যোগ গ্রহনের ক্ষেত্রে অনেক সময় আমরা কিছু ভুল করি এবং সেই ভুলের দরুন আমাদের গ্রহণকৃত উদ্যোগটিতে আমরা সহজে সফল হতে পারিনা বা সেই ভুলের কারণে আমরা ব্যর্থ হই। শুরুর দিকে সফল হলেও দেখা যায় কোনো একসময় প্রতিষ্ঠানটি দূর্বল হয়ে যায় ফলে আমাদের প্রতিষ্ঠানটির স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়না, বছর খানেকের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। যেমন ধরুন কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান।
একটা প্রতিষ্ঠান দাড় করানোর ক্ষেত্রে সফলতা শুরুর পর অনেক সময় নানা রকম ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। ঝুঁকি বলতে সাধারণত বোঝায় যার ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকি বা মুনাফা লাভের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। ব্যাবসায়িক ঝুঁকিকে সংজ্ঞায়িত করা যায় এভাবে, ব্যবসায়িক কাজে ভবিষ্যতে লাভলোকসানের অনিশ্চয়তা দেখা দিলে, সেটাকে বলা হয় ব্যবসায়িক ঝুঁকি। কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকি আসতে পারে নানাভাবে। এই ঝুঁকিটা এড়ানোর ক্ষেত্রে ফান্ড থাকতে হয়। থাকতে হয় বীমা। সেই ফান্ডটা না থাকলে পরবর্তীতে ঝুঁকির মুখে পড়লে সেখানেই সব গুঁটিয়ে পালাতে হয়। আর অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের ফান্ডিং এর অভাবে টিকতে পারে না খুব বেশিদিন। এর প্রধান কারণ হলো, তাদের ফান্ডিং নেই।
ফান্ডিং এর জন্য একটা ব্যাংক একাউন্ট বা বীমা করা আবশ্যক। কেনোনা ফান্ডিং ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়না। আপনার উদ্যোগে আপনি সফল, কিন্তু আপনার ফান্ডিং নেই, সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ কিন্তু নিশ্চিত নয়। কোনো এক সময় আপনার প্রতিষ্ঠানের ওপর ঝুঁকি এলে তখন সেটি সামাল দিতে সক্ষম হবেন না ফলে সেখানেই আপনার উদ্যোগটির পতন ঘটতে পারে।
যেমন ধরুন আপনি একটা উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন, কোনো এক সময় দেখা গেলো আপনার প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগার মতো দূর্ঘটনা ঘটে গেলো, এতে ক্ষয়ক্ষতি হলো ব্যাপক। অথচ আপনি সেখানে কোটি টাকা ইনভেস্ট করেছেন। আপনার যা সম্ভল ছিলো সবটাই ইনভেস্ট করে একটা প্রতিষ্ঠান দ্বার করেছেন অনেক কষ্ট করে। কিন্তু ফান্ডিং করেননি। যা লাভ এসেছে কর্মচারিদের বেতন দিয়েছেন, নিজে সব শেষ করেছেন। ঠিক সেই মুহুর্তে এমন দূর্ঘটনা এলে তখন আপনাকে তলিয়ে যেতে হবে অতল গভিরে। এই ক্ষতি মেটানোর মতো মাধ্যমও খুঁজে পাবেন না খুব একটা।
Read More:
যেভাবে শুরু করবেন ফেসবুকে পুরাতন বইয়ের ব্যবসা
কিন্তু আপনার ফান্ডিং বা বীমা থাকলে, সেখান থেকেই আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিটা খুব সহজেই মোকাবেলা করতে পারবেন। ব্যবসায়িক নানা প্রতিকুলতা এভাবেই মোকাবেলা করা যায়।
ফান্ডিং এর ক্ষেত্রে একটা ব্যাংক একাউন্ট এবং বীমা করুণ। ব্যাংক একাউন্টে প্রতি লাভের অংশ থেকে জমিয়ে রাখুন ভবিষ্যতে আপনার প্রতিষ্ঠার উন্নয়নের লক্ষে এবং বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য। আপনার যদি ফান্ডিং থাকে পাকাপুক্ত সেক্ষেত্রে আপনি ভবিষ্যতে আপনার প্রতিষ্ঠার উন্নয়ন সাধনের জন্য এটাকে আরও বড় করতে পারবেন, এবং পারবেন একাধিক শাঁখা প্রতিষ্ঠা করতে। আপনার প্রতিষ্ঠানের নামকে ব্রান্ডিং করতেও বেশ সহযোগিতা করে ফান্ডিং।
Read More:
ছাত্র জীবনে উপার্জনের নানা উপায়
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কর্পোরেট বীমা করা উত্তম। কর্পোরেট বীমা আপনার প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি, কর্মচারিদের স্বাস্থ্য সেবা, কোনো দূর্ঘটনা কিংবা চুরি ইত্যাদি নানা ঝুঁকির মুহুর্তে সেই ঝুঁকির বিরুদ্ধে নিজের প্রতিষ্ঠানকে কভার করে।
যদি একটি ব্যাংক একাউন্ট করা হয় এবং লাভের অংশ থেকে কিছুটা জমিয়ে রাখা হয়, তবে বছরে অনেক টাকা জমানো হবে ফান্ডিং এ। এটিই কোনো ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ফান্ড। পরবর্তীতে যেকোনো ঝুঁকি এড়ানো যাবে এই ফান্ডিং থেকেই। এবং সেই ফান্ড থেকেই নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নিতে পারবেন আপনার প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতি বৃদ্ধির জন্য।
কাজেই এটা হতে হবে একটা প্রতিষ্ঠানের প্রথম কাজ।
একনজরে দেখে নিন ফান্ডিং এর ব্যবহার;
§ ভবিষ্যতের ঝুঁকি মোকাবেলার ক্ষেত্রে।
§ নতুন ব্রান্স খোলার ক্ষেত্রে।
§ নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে।
§ মানবতার জন্য সহায়তার ক্ষেত্রে দরিদ্র মানুষদের।
§ অনলাইন পেইড প্রচারনার ক্ষেত্রে।
§ প্রতিষ্ঠানের টিম মেম্বারদের কঠিন কোনো বিপদের ক্ষেত্রে।
§ অন্যান্য ক্ষেত্রে।
কোনো প্রতিষ্ঠান শুরু লগ্নেই সেই প্রতিষ্ঠানের নামে ফান্ডিং করা আবশ্যক। ভবিষ্যতের সেই ঝুঁকিটা মোকাবেলা করতে সক্ষম হওয়া যায় খুব সহজে। ফান্ডিং না থাকলে ওইরকম ঝুঁকি এলে সেই প্রতিষ্ঠানের একরকম জলে ডোবা অবস্থা হয়ে যাবে। ঝুঁকির কথা তো আর বলা যায়না কখন আসে। তবে একজন উদ্যোক্তার সর্বদা সচেতন থাকা উচিৎ। সকল ঝুঁকি মোকাবিলার বিকল্প পথ আগে থেকেই নির্ধারন করে রাখা উচিৎ একজন সফল উদ্যোক্তার।
“একটা প্রতিষ্ঠানের স্থায়িত্ব বৃদ্ধির লক্ষে সকল ঝুঁকির মোকাবেলার জন্য একজন উদ্যোক্তাকে অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।”
এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।