বাবা
আফরা ইবনাত নওশিন
বাবা! শৈশবের বুড়ি কি আজ সত্যিই বুড়ি হয়েছে!!
সময়ে সময়ে যেন তোমাকে আমাকে ব্যবধান বেড়ে দিচ্ছে!
যখন হাটতে শিখেছি তখন প্রায় হোঁচট খেতাম,
তুমি ধরতে না কখনো, বলতে,
কাঁদিস কেন হোটচ খেয়েই বড় হতে হয়,
বড় হওয়ার সিঁড়িগুলো ডিঙানো যায় না।
বাবা! শৈশবের বুড়ি কি সত্যিই বুড়ি হয়েছে!
যখন আমাকে রাগানোর জন্য চেনা মানুষেদের বলতে,
এই বুড়িটাকে কুড়ে পেয়েছি রাস্তার মোড়ে,
বাবা!
তোমার নিত্য খাবার বসবার সময়,
যখন আমি আবদার করতাম একটু খাইয়ে দাও,
তোমার হাতের সেই মাখানো খাবার
অদ্ভুত তৃপ্তি দিতো!
এই বিকল্প কেউ দিতে পারেনি আজো!
বাবা!
শৈশবের বুড়ি কি আজ সত্যিই বুড়ি হয়েছে!
একবার দুঃস্বপ্নে দেখেছি,তোমাকে হারিয়েছি!
সারারাত কেঁদে কাটিয়েছি,
তুমি থাকতেই আমার এতো ভয় হয়,
চলে গেলে কি হবে!!
বার্ধক্যে এসে যেন তুমি এক নির্বাক সমুদ্র হয়ে গেছো,
বড় দুর্বোধ্য হয়ে যাচ্ছো যেন তুমি!
যেন তোমার চোখে কি লেখা আছে,
এ বুঝতে আমার একটি শতাব্দী ফুরিয়ে যাবে,
কি অদ্ভুত! আগের মতো কেঁদে কেটে,
সারাদিন বায়না করতে পারিনা, কেন যেন!!
বাবা!
শৈশবের বুড়ি কি আজ সত্যিই বুড়ি হয়েছে!
বাবা!
জীবনের রং কত বিচিত্র!কখনো লাল,কখনো নীল!
কখনো আবার চুপসে যাওয়া ভুলের মতো,
নিষিদ্ধ কল্পনাগুলি বন্ধ্যা,
অলক্ষ্যে প্রসব করে অব্যক্ত বেদনা,
জন্মের প্রথম কাল হতে আমরা বুদ্বুদ মাত্র জীবনের স্রোতে,
তা এখন জানি বাবা...
বাবা!
শৈশবের বুড়ি কি আজ সত্যিই বুড়ি হয়েছে!
লেখক - আফরা ইবনাত নওশিন (রংপুর)
এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।