বই রিভিউ – রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেন নি

Nir
0

বই পরিচিতি 

বইয়ের নাম – রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেন নি

লেখক – মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

বইয়ের ধরণ – থৃলার, এডভেঞ্চার, রহস্য উপন্যাস

প্রকাশনী – বাতিঘর প্রকাশনী

পৃষ্টা – ২৭০

মূল্য – ৩৪০

রিভিউ

উত্তরবঙ্গের মফস্বল গ্রাম সুন্দরপুর। ছবির মতোই দেখতে সুন্দর এ গ্রামখানি। হঠাত একদিন আগমন ঘটে এ গ্রামে এক আগন্তুকের। ডিবির নাম করা অফিসার নূরে ছফা। গল্পের শুরুটা সুন্দরপুর গ্রামের হাইওয়ের পাশে থাকা অদ্ভুত নামকরা “রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেনি” রেস্টুরেন্টকে ঘিরে। রেস্টুরেন্টটি এতটাই সুন্দর আর অদ্ভুত যে ছফার মনে আগ্রহ জন্মালো সেখানে যাওয়ার। সেখানে গিয়ে লক্ষ করলে, এই রেস্টুরেন্টের ওয়েটার, খাবার সব অদ্ভুত। খাবারের এতোটাই স্বাদ যে খাওয়ার সময় আশপাশ আর হুস থাকে না। আঙুল চেটে খেলেও স্বাদ কাটেনা। এই রেস্টুরেন্টের মালিক মুশকান জুবেরি ও সেখানকার কর্মচারীরা এটাকে বলে আপ্যায়নশালা। নূরে ছফার মনে তীব্র ইচ্ছা জাগলো কি দিয়ে এ খাবার তৈরি? কেনই বা এতো স্বাদ এ খাবারের? এই রেস্টুরেন্টের মালিক কে?

রেস্টুরেন্টের অপর দিকে রহমান মিয়ার গুঁড়ের চায়ের দোকান। সেখানে জানতে পারে আরও কিছু তথ্য। সেখানেই পরিচিত হয় সেখানকার লোকাল থানার ইনফর্মার আতর আলীর সাথে। সেই এলাকার এমন খবর নেই সে জানেনা। যার কারণে এলাকার সকলে তাকে ডাকে বিবিছি (বিবিসি) বলে। তার সাথে ছফার বেশ খাতির হয়। তাকে খুলে বলে সব। সে জানতে চায় এই রেস্টুরেন্ট ও এর মালিক সম্পর্কে সবকিছু। আতর আলীর কাছে সে পরিচয় দেয় তিনি একজন মহাকাল পত্রিকার সাংবাদিক। এই রেস্টুরেন্ট নিয়ে সে প্রতিবেদন করতে চায়। তারপর শুরু হয় আতর আলীকে সাথে রহস্যের উন্মোচন।

তারপর ঘটনা যতই এগোতে থাকে, একে একে উঠে আসে নানান সব লোমহর্ষক রহস্য। ঘটনার মোড় ঘুরতে থাকে চতুর্দিকে। ফেলে দেয় গোলক ধাঁধাঁর মধ্যে।

সেই এলাকার ফালু নামের গোরখোদক। যে কিনা মানুষ মৃত্যুর আগেই জানতে পারে কে মরবে আজ। এডভান্স গোর খুঁড়ে রাখে টার জন্য। কিন্তু তার এই এডভান্স গোরখোরার মধ্যে রয়েছে অজানা এক রহস্য। কি সেই রহস্য?

রবীন্দ্রপ্রেমী মুশকান জুবেরির এমন রেস্টুরেন্ট দেয়ার মাঝে রয়েছে বিশাল এক রহস্য। যা পাঠককে রোমাঞ্চিত করবে। মুশকান জুবেরি থাকেন জোড়পুকুর জমিদার বাড়িতে। তিনি দাবি করেন, সেই এলাকার শেষ জমিদার অলোকনাথ বসুর ছেলে রাশেদ জুবেরির বউ। ঘটনা চক্রে উঠে আসে নানান সব অবিশ্বাস্য ঘটনা। যা পাঠককে করে দিবে শিহরিত। এক সময় ছফা জানতে পারে সেই নারীর বয়স নাকি ৭৩। কিন্তু দেখে মনে হয় ৩০ এর বেশি হবে না। ঘটনাচক্রে উঠে আসে আরেক লোমহর্ষক অবিশ্বাস্য ঘটনা। কি সেই রহস্য? কেনই বা তার বয়স বাড়লো না? নাকি পুরোটাই কাকতালীয়? ছফার কি এখানে আসার উদ্যেশ্য সফল হবে? সে কি তার কেসটা সলভ করতে পারবে? জানতে হলে পড়ুন হবে বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় থৃলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেনি’ বইটি।

পাঠ-প্রতিক্রিয়া

২০১৯ সালের তুমুল জনপ্রিয় এই বইটি পড়ার আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু বইটা কেনা হয়ে উঠেনি। শেষ পর্যন্ত পেপাররাইম ডট কমে ডাটা এন্ট্রির কাজের সুবাধে সেখান থেকে বইটা নেয়া। পড়া শুরু করে রীতিমতো চমকে উঠেছিলাম। শুরু থেকে কিছুদূর যাওয়ার পর বই ছাড়ার আর ইচ্ছা একদমই বন্ধ হয়ে গেলো। ঘটনাচক্র এতোটাই গোলকধাধা রহস্য রোমাঞ্চ থ্রিল আর টুইস্টে ভঁরা। অনেক সময় বই রেখে ভয়ে আসপাশ তাকাতেও হয়েছে বৈকি। শিউরেও যে উঠিনি তা নয়। বই শেষ হওয়ার পর তো পুরো দশ মিনিট নিস্তব্ধ হয়ে গেছিলাম। ভেবেছিলাম অনেকক্ষণ পুরো ঘটনা। যেনো আমার চোখের সামনেই ঘটলো সব। লেখক এই বইয়ে বৈজ্ঞানিক কিছু উপকরণ ও ব্যবহার করেছেন। 

শেষ কথা

মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন আমার প্রিয় একজন লেখক। তার লেখা সেরা থ্রিলার উপন্যাস গুলোর মধ্যে একটি রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেন নি। এটি একটি সিরিজ উপন্যাস।

বইটি কিনে পড়ার সামর্থ থাকলে অনুগ্রহ করে বইটি কিনে পড়ুন, পিডিএফ না খুঁজে।

Post a Comment

0Comments

এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!