সুবর্ণ এক্সপ্রেস বাংলাদেশের অন্যতম দ্রুতগামী আন্তঃনগর ট্রেন, যা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে নিতমিত সরাসরি চলাচল করে। রেল ভ্রমণ পছন্দ করেন এমন যাত্রীদের জন্য সুবর্ণ এক্সপ্রেস একটি জনপ্রিয় পছন্দ, কারণ এটি কোনো বিরতি ছাড়াই দুই শহরের মধ্যে দ্রুত চলাচল করে।
সুবর্ণ বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী |
অনেকেই রয়েছেন, যারা সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী অনুসন্ধ্যান করেন, আর তাই আমরা এই নিবন্ধে জানবো সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী, বিরতি স্টেশন ও ভাড়ার তালিকা সহ যাবতী তথ্যাদি।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস
১৯৯৮ সালের ১৪ এপ্রিল উদ্বোধনকৃত এই ট্রেনটি, বাংলাদেশ রেলওয়ের অন্যতম প্রিমিয়াম সার্ভিস হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে ১৯৯৮ সালের ১৪ই এপ্রিল সুবর্ণ এক্সপ্রেস চালু হওয়ার পর এটি মহানগর এক্সপ্রেস নামে বাংলাদেশের একমাত্র প্রথম আন্তঃনগর হিসেবে চলাচল করে। যার নাম্বার ছিলো ৭০১/৭০২ পরে সুবর্ণ এক্সপ্রেস চালু হলে মহানগর এক্সপ্রেস এর নাম্বার সুবর্ণ একপ্রেস এ দিয়ে দেয়া হয় এবং মহানগর এক্সপ্রেস নতুন নাম্বার হিসেবে ৭২১/৭২২ পায়।
প্রাথমিকভাবে ২৭০০ ও ২৬০০ শ্রেণীর লোকোমোটিভ ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে ৩০০০ সিরিজের লোকোমোটিভ দ্বারা সুবর্ণ এক্সপ্রেস পরিচালিত হচ্ছে। আগে ইরানি সবুজ-হলুদ কোচে চললেও ২০০৭ সালে চীনা সাদা কোচে পাল্টানো হয়, যার আসন সংখ্যা ৮৯৯। ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর থেকে ইন্দোনেশিয়ান লাল-সবুজ কোচ ব্যবহার শুরু হয়।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৬ জুন দক্ষিণ কোরিয়ার আধুনিক কোচ যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে ট্রেনটির ৮টি তাপানুকুল, ৭টি শোভন চেয়ার, খাবার গাড়িসহ ১৮টি কোচ এবং মোট আসন ৮৯০টি। শীঘ্রই কেবিন কোচও যুক্ত করা হবে।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে ছাড়ে এবং রাত ৯টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছায়।
চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনটি ছাড়ে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে এবং ঢাকায় পৌঁছায় দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে।
যাত্রীদের সুবিধার্থে সপ্তাহে একদিন, সোমবার, ট্রেনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন পালন করে।
একনজরে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী
ট্রেনের নাম | ছাড়ার সময় | পৌঁছানোর সময় | বন্ধের দিন |
---|---|---|---|
সুবর্ণ এক্সপ্রেস (Dhaka to Chattogram) | বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট | রাত ৯টা ২৫ মিনিট | সোমবার |
সুবর্ণ এক্সপ্রেস (Chattogram to Dhaka) | সকাল ৭টা ৩০ মিনিট | দুপুর ১২টা ২৫ মিনিট | সোমবার |
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়ার তালিকা
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে রয়েছে যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের আসন। শোভন, স্নিগ্ধা, এফ সিট এবং এসি চেয়ার সহ যাত্রীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরণের আসন। ভাড়ার তালিকা নিম্নরূপ:
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৪৫০ টাকা, এফ সিট চেয়ারের ভাড়া ৬৮৫ টাকা, স্নিগ্ধা চেয়ারের ভাড়া ৮৫৫ টাকা এবং এসি চেয়ারের ভাড়া ১০২৫ টাকা।
একনজরে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়ার তালিকা
আসন | মূল্য |
---|---|
শোভন চেয়ার | ৪৫০ টাকা |
স্নিগ্ধা চেয়ার | ৮৫৫ টাকা |
এফ সিট | ৬৮৫ টাকা |
এসি চেয়ার | ১০২৫ টাকা |
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের বৈশিষ্ট্য
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিরতিহীন হওয়ায় এটি যাত্রীদের খুব দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। ট্রেনটির কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো:
- বিরতিহীন যাত্রা: ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্রগ্রামে যাবার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ঢাকা বিমানবন্দরে ৫ মিনিটের জন্য যাত্রা বিরতি দেয়, এছাড়া আর কোথাও থামেনা। ফলে দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছায় দেয়।
- আরামদায়ক কোচ: শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচ, আরামদায়ক আসন এবং পর্যাপ্ত স্পেস রয়েছে এই ট্রেনে।
- খাবার ও পানীয়: ট্রেনটিতে খাবার ও পানীয়ের সেবা পাওয়া যায়।
- চার্জিং সুবিধা: প্রতিটি কোচে মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ চার্জ দেওয়ার সুবিধা রয়েছে।
- শৌচাগার: আধুনিক শৌচাগারের সুবিধা যাত্রীদের জন্য উপলব্ধ।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সুবিধাসমূহ
সুবর্ণ এক্সপ্রেসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি বিরতিহীন ট্রেন। ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্রগ্রামে যাবার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ঢাকা বিমানবন্দরে ৫ মিনিটের জন্য যাত্রা বিরতি দেয়, এছাড়া আর কোথাও থামেনা। ফলে দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছায় দেয়। ফলে যাত্রার সময় অনেক কমে আসে। এছাড়াও, ট্রেনটিতে আরামদায়ক আসন, আধুনিক শৌচাগার এবং খাবার ও পানীয় সরবরাহের ব্যবস্থা থাকায় যাত্রা আনন্দদায়ক হয়।
সচরাচর জিজ্ঞাসা (FAQ)
সুবর্ণ এক্সপ্রেসের সাপ্তাহিক ছুটির দিন কী?
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলো সোমবার।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে কখন ছাড়ে?
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে কখন ছাড়ে?
চট্টগ্রাম থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ছাড়ে এবং ঢাকায় পৌঁছায় দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের শোভন চেয়ার ভাড়া কত?
শোভন চেয়ারের ভাড়া ৪৫০ টাকা।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি কতক্ষন সময় নেয়?
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে প্রায় ৪ ঘন্টা ৫৫ মিনিট সময় নেয় এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসতেও একই সময় প্রয়োজন।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি কি বিরতিহীন?
হ্যাঁ, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি একটি বিরতিহীন ট্রেন। এটি শুধুমাত্র ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর স্টেশনে থামে।
শেষ কথা
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ট্রেন, যা যাত্রীদের জন্য দ্রুত এবং আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করে। এর বিরতিহীন সেবা, আরামদায়ক আসন এবং বিভিন্ন শ্রেণীর টিকিটের মাধ্যমে এটি ভ্রমণকারীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাই, বাংলাদেশ রেলওয়ে ব্যবহারের সময় সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি একটি আদর্শ পছন্দ। আপনার টিকিট আগেই অনলাইনে কেটে নিন, কারণ যাত্রার দিন টিকিট পেতে সমস্যা হতে পারে।
আপনার যাত্রা শুভ হোক!
এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।