মাধ্যমিকের গণ্ডী পেড়িয়ে কলেজ লাইফে আসার ক্ষেত্রে অনেকেই জেনারেলে চলে যাই আবার অনেকে কারিগরিতে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ সাবজেক্ট সেলেক্ট করার ক্ষেত্রে আমরা বেশ একটা সমস্যার মধ্যে পড়ি। প্রত্যেকে চাই ভালো একটা ডিপার্টমেন্টে পড়তে। কিন্তু ঠিক কোন ডিপার্টমেন্টগুলো সেরা সে সম্পর্ক আমাদের ধারনা সচরাচর অজ্ঞ। আজকে আমরা জানবো এই আর্টিকেলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং -এর সেরা পাঁচটি ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে এবং আরও জানবো ডিপার্টমেন্ট চয়েজ করার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলো আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সেরা পাঁচ ডিপার্টমেন্ট |
অনেকের কাছ থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর সেরা ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে পরামর্শ চাইলে তাঁরা বলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর সব ডিপার্টমেন্টই ভালো। যেকোনো একটাতে পড়লেই চাকরি হবে। কাজেই যেকোনো একটাতে পড়তে পারো। সচরাচর এমনটাই পরামর্শ দেয় ডিপ্লোমা পড়ুয়া অনেক বড় ভাইরা। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সব ডিপার্টমেন্ট কিন্তু উত্তম না ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে। তবে ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার কথা মাথায় রাখলে কিন্তু সব ডিপার্টমেন্ট ভালো না।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ যারা পড়ালেখা করতে আসে, তাদের মধ্যে অধিকাংশেরই লক্ষ থাকে সরকারি চাকরি কিংবা যেকোনো একটা চাকরি। কারণ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ণ হবার পরই একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার যেকোনো প্রতিষ্ঠানে উপসহকারি প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পান। কিন্তু একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে - সব ডিপার্টমেন্টেরই সরকারি চাকরির সুযোগ অধিক নেই। বিশেষকরে বাংলাদেশে। কোনোটার কম আর কোনোটার বেশি।
কাজেই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং চয়েজ দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের মাথায় রাখতে হবে কোন ডিপার্টমেন্টগুলোর সরকারি চাকরির সুযোগ অধিক। কোন ডিপার্টমেন্ট থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ণ করার পরই খুব সহজেই নিজের ক্যারিয়ার গড়া যায়। তোমাদের ডিপার্টমেন্ট চয়েজের সুবিধার্থে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং -এর পাঁচটি সেরা ডিপার্টমেন্ট বিশেষকরে বাংলাদেশে এই আর্টিকেলে উল্লেখ্য করলাম।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সেরা ডিপার্টমেন্ট সমূহ;
- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
- টেক্সাটাইল
নিচে উপরুক্ত সেরা পাঁচ ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো;
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে সেরা একটি ডিপার্টমেন্ট হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ জব সার্কুলার। চাকরির সুযোগ অনেক রয়েছে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে।
কাজেই সকল ডিপার্টমেন্টের থেকে সিভিল ডিপার্টমেন্ট থেকে সরকারি চাকরি সবথেকে বেশি পাওয়া যায়।
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে সেরা ডিপার্টমেন্টগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। বর্তমানে বাংলাদেশে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ জব সার্কুলার। চাকরির সুযোগ অনেক রয়েছে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে।
কাজেই সকল ডিপার্টমেন্টের থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের সরকারি চাকরির সুযোগ সবথেকে বেশি পাওয়া যায়।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে সেরা ডিপার্টমেন্টগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। বর্তমানে বাংলাদেশে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর রয়েছে প্রচুর পরিমাণ জব সার্কুলার। চাকরির সুযোগ অনেক রয়েছে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে।
কাজেই সকল ডিপার্টমেন্টের থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে সরকারি চাকরি সবথেকে বেশি পাওয়া যায়। এছাড়াও বাংলাদেশে অনেক বড় বড় কোম্পানিতে যেমন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পাওয়ার প্ল্যানের মতো বড় বড় সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ মেলে। যেখানে বেতনের স্কেল গিয়ে দাঁড়ায় আশি থেকে এক লক্ষ টাকায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং থেকেই।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মোটামুটিভাবে ভালো একটি ডিপার্টমেন্ট বলা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে জব সার্কুলার খুবই কম রয়েছে। অতীত থেকেই কম ছিলো।
তবে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বেস্ট একটা ডিপার্টমেন্ট। অনেকের মতে মনে হতে পারে বিশ্বের অধিকাংশ ধনি ব্যাক্তিই তো কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে হয়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভেবে দেখুন তো কতজন হয়েছে। যদি আপনার লক্ষ হয় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেই চাকরি, সেক্ষেত্রে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং আপনার জন্য না। এবং ফ্রিল্যান্সিং পেশার কথা ভাবলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং না পড়েও ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। তবে বর্তমানে উন্নত দেশগুলোতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিমান্ড অনেক বেশি।
তবে আপনার যদি কম্পিউটারের প্রতি প্রচুর পরিমানে ঝোঁক থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং হবে আপনার জন্য উত্তম।
তবে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর বিভিন্ন আইটি সেকশনে জব মেলে। সেক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং, প্রোগ্রামিং ভাষা দক্ষতা থাকা দরকার। প্রোগ্রামিং ভাষা দক্ষতা ভালো থাকলে সাইবার সিকিউরিটিতে জব মেলে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েব মেইন্টেইনেন্স সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে বাহিরের দেশে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিমান্ড অনেক বেশি।
টেক্সাটাইল
টেক্সাটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে সেরা একটি সাবজেক্ট। বর্তমানে বাংলাদেশে টেক্সাটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণ জব সার্কুলার রয়েছে। চাকরির সুযোগ অনেক রয়েছে টেক্সাটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে। কাজেই সকল ডিপার্টমেন্টের থেকে টেক্সাটাইল ডিপার্টমেন্টের থেকে সরকারি চাকরি তুলনামূলক বেশিই পাওয়া যায়।
ব্যাক্তিগত মতামত
আমি ব্যাক্তিগত ভাবে একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। এই সাবজেক্টটা আমার ব্যাক্তিগতভাবে খুবই প্রিয়। কারন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কে বলা হয় ইঞ্জিনিয়ারিং এর ইভারগ্রিন সাবজেক্ট। শুধু কী তাই! মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কে বলা হয় অন্য সকল প্রকৌশল শাখার জননি। ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে একাধিক সাবজেক্টে পিএইচডি করতে চাইলে বেশ কয়েকটা সাবজেক্টে পিএইচডি করতে পারবেন। আমার লক্ষ যেহেতু সেই দিকে সেদিক বিবেচনা করে এটাই বেঁচে নিয়েছি। কাজেই আপনারাও ভাবুন এভাবে, আপনার জন্য কোনটা বেস্ট।
তবে আমি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ এসে বড় ধরনের ভুল করেছিলাম কারন আমার স্বপ্ন ডিপ্লোমা করে চাকরি নয়, উচ্চ শিক্ষা। আপনার স্বপ্নও যদি হয় তাই সেক্ষেত্রে আপনার উচিৎ হবেনা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর সুবিধা ও অসুবিধা কেনো পড়বেন এবং কেনো পড়বেন না সে বিষয়ে জানতে পড়তে পারেন আমার নিচের লেখাটা। উপকারে আসতে পারে।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং -এ ভর্তি হওয়ার আগে যা জানা বাধ্যতামূলক
আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা জানার থাকলে নিচে কমেন্ট বক্সে বলুন। অতি দ্রুত রিপ্লাই দেয়া হবে।
আরও পড়ুন
যেভাবে খুলবেন এবি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট বিস্তারিত
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেরা ৩২টি উক্তি
যেসকল দেশে গ্রীষ্মকালে ক্রিসমাস উৎসব পালন করা হয়
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং -এ ভর্তি হওয়ার আগে যা জানা বাধ্যতামূলক
আমার আধিক অবস্থা প্রচুর খারাপ।
ReplyDeleteআমি কি করবো বুঝতে পারছি না।
১. আপনার যদি ডিপ্লোমা করেই চাকরী করার ইচ্ছা থাকে তবে ডিপ্লোমাতে আসতে পারেন, এক্ষেত্রেও রেজাল্ট ভালো থাকতে হবে। নিজের জেলার সরকারি পলিটেকনিক থেকে পড়ার চেষ্ঠা করুন, তাহলে থাকা খাওয়া লাগবেনা শুধুমাত্র সেমিস্টার ফী এবং সেশন ফী আর বই কেনা হলেই হলো। তাছাড়া ৬ মাস পর পর ৪ হাজার টাকা উপবৃত্তি প্রদান করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রতি সেমিস্টারে পাস করলে।
Deleteআর যদি আপনি বেসরকারি থেকে ডিপ্লোমা করতে চান তবে বেতনের প্রয়োজন অনেক এছাড়াও বাহিরে সরকারি পলিটেকনিক এ চান্স পেলে তখন থাকা-খাওয়া অনেক লাগে। যদি ইন্সটিটিউটের হোস্টেলে চান্স পান তাহলে সেটা কমে যায়।
২. এসএসসিতে যদি আপনার সিজিপিএ ভালো থাকে তবে সরকারি কলেজে সায়েন্স থেকে পড়ার চেষ্ঠা করুন এতে করে ইন্টারের পর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডমিশন দিতে পারবেন এবং আপনার উচ্চ শিক্ষার দুয়ার খুলে যাবে, অনেক ইজি হয়ে যাবে।
- উইব্লগবিডির সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ