দেশের সেরা দশ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট |
এসএসসির পর অনেকে সিদ্ধান্ত নেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার কিন্তু কোন প্রতিষ্ঠানটি সেরা বা ইন্সটিটিউট চয়েজের ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো সেক্ষেত্রে পড়ে যান দ্বিধাদণ্ডের মধ্যে। আমরা আজকে জানবো দেশের সেরা দশটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সম্পর্কে যেগুলো দেশের সেরা এবং শ্রেষ্ঠ পলিটেকনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নির্দিধায় আপনারা এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে চয়েজ দিতে পারেন।
এক নজরে দেশের সেরা দশ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
দেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট হলো;
- রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
- ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- চট্রগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
দেশের সেরা দশ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
১. রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট (Rangpur Polytechnic Institute) একটি দেশের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহত্তম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এটি দেশের সবথেকে সেরা এবং প্রথম সারির একটি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কয়েকবছর ধরে রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে ডুয়েটে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম এবং ক্রমেই এর সংখ্যা বাড়তেছে।
রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮২ সালে। রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট রংপুর শহরের জুম্মাপাড়ায় অবস্থিত। এর বিপরীতে রংপুর বিভাগীয় কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অবস্থিত।
২০১৯ সালে রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। কাজেই রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউ এর অবস্থান সর্বসাকুল্যে বিবেচনা করলে এটি দেশের প্রথম সারির একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কে বলা হয় ডিপ্লোমার বুয়েট। এর একাডেমিক এবং আবাসিক ভবনগুলো সিরামিক ইট দ্বারা নির্মিত ফলে এর সৌন্দর্য যে কাউকেই মুগ্ধ করে। আয়তনের দিক দিয়েও এটি বেশ বড়। ৩২.৯ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে এর ক্যাম্পাস।
রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে রয়েছে ছেলেদের জন্য দুটি ছাত্রাবাস এবং মেয়েদের জন্য রয়েছে একটি। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রয়েছে দুটি বৃহদাকার মাঠ। একটি ক্যাম্পাসের মধ্যে এবং অন্যটি ক্যাম্পাসের বাহিরে রংপুর পলিটেকনিক উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে। এর পাশেই সদ্য গড়ে উঠতেছে রংপুর সরকারি মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট যেটির কাজ প্রায় শেষের দিকে।
রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে চান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোতে জিপিএ ৪.৭০ এর উপরে প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সুযোগ মিলেছে। তবে সিভিলের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র গোল্ডেন এ+ প্রাপ্তরাই চান্স পেয়েছে। তবে ২০২২ এর হিসেবে প্রথম চয়েজ সেলেকশনে সকল ডিপার্টমেন্টে উভয় শিফটেই গোল্ডেন এ+ প্রাপ্তরাই সুযোগ পেয়েছে। অসংখ্য এ+ সহ বেশ কয়েকজন গোল্ডেন এ+ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত ওয়েটিং লিস্টে রয়েছে দ্বিতীয় চয়েজের রেজাল্টের অপেক্ষায়।
২. ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও বৃহত্তম সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। এটি ঢাকার তেজগাঁও শিল্পএলাকায় অবস্থিত। এর উত্তরে বাংলাদেশ টেক্সাইল বিশ্ববিদ্যালয়। এর পিছনেই হাতিরঝিল অবস্থিত। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৫ সালে।
ঢাকা পলিটেকনিক দেশের শ্রেষ্ঠতম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট গুলোর মধ্যে একটি। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে প্রতিবছর বহু সংখ্যক শিক্ষার্থী ডুয়েটে চান্স পেয়ে থাকে এবং এর শিক্ষাব্যবস্থা বেশ ভালো। চাকরির ক্ষেত্রেও এই প্রতিষ্ঠান রয়েছে অনেকাংশেই এগিয়ে।
ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রাকটিকেল ল্যাবগুলিতে রয়েছে অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ফলে শিক্ষার্থীরা হাতের কাজ শেখার মাধ্যমে নিজের স্কিলস গড়তে পারে সহজেই।
৩. বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের একটি পুরাতন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি পার্বত্য চট্রগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই হ্রদের একদম তীরে অবস্থিত।
বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের একটি সবথেকে পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর দৃষ্টিনন্দন একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। এর এর চারদিকেই পাহাড়সারি। এটি ১৯৬০ সালে পাকিস্তান সরকার এবং সুইডেন সরকারের যৌথভাবে উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সম্পূর্ণরূপে রাজনীতিমুক্ত একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। এই প্রতিষ্ঠানটি রাজনীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সারা দেশে রয়েছে এর সুনাম।
দেশ বরেন্য নাট্যকার ও উপস্থাপক হানিফ সংকেতসহ চট্টগ্রামের সাবেক মরহুম জননেতা জনাব দস্তগীর (বিএনপি), এসআলম গ্রুপের একজন কর্নধার, ক্রিড়া সংগঠক জনাব নুরু ভাই ( জাতীয় ফুটবলদলের সাবেক অধিনায়ক এর বাবা), দেশের বিশিষ্ট ফুটবলার পান্না লাল নন্দী, মন্জু, গনপুর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জনাব ওম প্রকাশ নন্দী তাপস, চট্টগ্রাম পিডিবির তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জনাব অশোক কুমার চৌধুরী, চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব তয়ন কুমার ত্রিপুরা, এছাড়াও আরও অনেক কৃতিছাত্র সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে, জনপ্রতিনিধি, সফল ব্যাবসায়ী হিসাবে স্বমহিমায় দেদীপ্যমান আছেন। এরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন। সেখান থেকেই তাঁরা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ণ করেন।
৪. ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের নারীদের কারিগরি শিক্ষায় প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটগুলোর মধ্যে একটি। মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট গুলোর মধ্যে ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট একটি প্রথম সারির পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট।
ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি ঢাকা শহরের প্রণকেন্দ্র আগারগায়ের শিক্ষা পল্লীতে অবস্থিত । বর্তমানে এর ডিপার্টমেন্ট সংখ্যা ১টি এবং রূপসী বাংলা নামের একটি ছাত্রাবাস রয়েছে।
৫. রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট একটি দেশের প্রাচীনতম সেরা সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৩ সালে। রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট রাজশাহীর সপুরাতে ১৫ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।
রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট -এর রয়েছে মোটে ৮টি ডিপার্টমেন্ট এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ২টি ছাত্রাবাস ও ১টি ছাত্রীনিবাস।
৬. সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও বৃহত্তম সরকারি পলিটেকনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি সিলেটের বরইকান্দি এলাকায় অবস্থিত। সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে মাত্র ১কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৫ সালে।
সিলেট পলিটেকনিক দেশের শ্রেষ্ঠতম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট গুলোর মধ্যে একটি। সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট -এর রয়েছে ৭টি ডিপার্টমেন্ট এবং ২টি ছাত্রাবাস ও ১টি ছাত্রীনিবাস।
৭. চট্রগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
চট্রগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট চট্রগ্রাম শহরে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। এটি ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
দেশের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চট্রগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট একটি। এটি ২০ একর জায়গাজুরে অবস্থিত। এর পূর্বে রয়েছে বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। চট্রগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে বর্তমানে ৭টি ডিপার্টমেন্ট চালু আছে।
চট্রগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট -এর রয়েছে ৫টি ছাত্রাবাস এবং ১টি ছাত্রীনিবাস।
৮. বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট একটি দেশের অন্যতম বৃহৎ এবং সেরা সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে। বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বগুড়ার শেরপুর সড়কের পাশে ২০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।
বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট -এর রয়েছে মোটে ৭টি ডিপার্টমেন্ট এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ৩টি ছাত্রাবাস ও ১টি ছাত্রীনিবাস।
৯. পাবনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
পাবনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট একটি দেশের অন্যতম বৃহৎ এবং সেরা সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে। পাবনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট পাবনা শহরের গাংকোলায় অবস্থিত। এটি ৩০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।
পাবনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট -এর রয়েছে মোটে ১০টি ডিপার্টমেন্ট এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ১টি ছাত্রাবাস ও ১টি ছাত্রীনিবাস।
১০. বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট একটি দেশের অন্যতম বৃহৎ এবং সেরা সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে। বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট বরিশাল শহরের আলেকান্দা - পলিটেকনিক রোডের পাশে অবস্থিত।
বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট -এর রয়েছে মোটে ৮টি ডিপার্টমেন্ট এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ২টি ছাত্রাবাস ও ১টি ছাত্রীনিবাস।
আরও পড়ুন
যেভাবে খুলবেন এবি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট বিস্তারিত
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেরা ৩২টি উক্তি
যেসকল দেশে গ্রীষ্মকালে ক্রিসমাস উৎসব পালন করা হয়
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং -এ ভর্তি হওয়ার আগে যা জানা বাধ্যতামূলক
এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।