বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেরা ৩২টি উক্তি |
“মানুষ কি চায় — উন্নতি, না আনন্দ? উন্নতি করিয়া কি হইবে যদি
তাহাতে আনন্দ না থাকে? আমি এমন কত লোকের কথা জানি, যাহারা জীবনে উন্নতি করিয়াছে
বটে, কিন্তু আনন্দকে হারাইয়াছে। অতিরিক্ত ভোগে মনোবৃত্তির ধার ক্ষইয়া ভোঁতা — এখন
আর কিছুতেই তেমন আনন্দ পায় না, জীবন তাহাদের নিকট একঘেয়ে, একরঙা, অর্থহীন। মন
শান-বাঁধানো — রস ঢুকিতে পায় না।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, আরণ্যক
“মানুষের আয়ু মানুষের জীবনের ভুল মাপকাঠি। দশ বছরের জীবন সে
উপভোগ করেছে দেড় বছরে।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, চাঁদের পাহাড়
“যে জিনিস যত দুষ্প্রাপ্য মানুষের মনের কাছে তাহার মূল্য অনেক
বেশি। এ কথা খুবই সত্য যে, এই মূল্য মানুষের মনগড়া একটি কৃত্রিম মূল্য, প্রার্থিত
জিনিসের সত্যকার উৎকর্ষ বা অপকর্ষের সঙ্গে এর কোন সম্বন্ধ নাই। কিন্তু জগতের
অধিকাংশ জিনিসের উপরই একটি কৃত্রিম মূল্য আরোপ করিয়াই তো আমরা তাকে বড় বা ছোট
করি।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, আরণ্যক
“কিন্তু মানুষের জীবনে এমন সব অদ্ভুদ ঘটনা ঘটে তা উপন্যাসে
ঘটাতে গেলে পাঠকরা বিশ্বাস করতে চাইবে না, হেসেই উড়িয়ে দেবে।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, চাঁদের পাহাড়
“একশত বৎসর একসঙ্গে থাকিলেও কেহ হয়তো আমার হৃদয়ের বাহিরে
থাকিয়া যায়, যদি না কোনো বিশেষ ঘটনায় সে আমার হৃদয়ের কবাট খুলিতে পারে।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, Aparajito, Yang tak Terkalahkan
“এই জনহীন প্রান্তর, এই রহস্যময়ী রাত্রি, অচেনা নক্ষত্রে ভরা
আকাশ, এই বিপদের আশঙ্কা - এইতো জীবন। শান্ত নিরাপদ জীবন নিরীহ কেরানীর জীবন হতে
পারে - তার নয় -”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়
“মা ছেলেকে স্নেহ দিয়া মানুষ করিয়া তোলে, যুগে যুগে মায়ের
গৌরবগাথা তাই সকল জনমনের বার্তায় ব্যক্ত। কিন্তু শিশু যা মাকে দেয়, তাই কি কম? সে
নিঃস্ব আসে বটে, কিন্তু তার মন-কাড়িয়া-লওয়া হাসি, শৈশবতারল্য, চাঁদ ছানিয়াগড়া মুখ,
আধ আধ আবোল-তাবোল বকুনির দাম কে দেয়? ওই তার ঐশ্বর্য, ওরই বদলে সে সেবা নেয়, রিক্ত
হাতে ভিক্ষুকের মতো নেয় না।"
বল্লালী-বালাই (পথের পাঁচালী)”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, Pather Panchali: Song of the Road
“এসব ভবিষ্যতের মেয়ে, অনাগত দিনের আগমনী এদের অলক্তরাগরক্ত
চরণধ্বণিতে বেজে উঠেছে, কেউ কেউ শুনতে পায়। আজ গ্রাম্য সমাজের পুঞ্জীকৃত অন্ধকারে
এইসব সাহসিকা তরুণীর দল অপাঙক্তেয়--প্রত্যেক চন্ডীমন্ডপে গ্রাম্য বৃদ্ধদের মধ্যে
ওদের বিরুদ্ধে ঘোঁট চলচে, জটলা চলচে, কিন্তু ওরাই আবাহন করে আনচে সেই অনাগত
দিনটিকে।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
“বর্ষার দিনে এই ইছামতীর কূলে কূলে ভরা ঢলঢল রূপে সেই অজানা
মহাসমুদ্রের তীরহীন অসীমতার স্বপ্ন দেখতে পায় কেউ কেউ..কত যাওয়া-আসার অতীত ইতিহাস
মাখানো ঐ সব মাঠ, ঐ সব নির্জন ভিটের ঢিপি--কত লুপ্ত হয়ে যাওয়া মায়ের হাসি ওতে
অদৃশ্য রেখায় আঁকা। আকাশের প্রথম তারাতা তার খবর রাখে হয়তো।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
“জীবন বড় মধুময় শুধু এইজন্য যে, এই মাধুর্যের অনেকটাই স্বপ্ন ও
কল্পনা দিয়া গড়া। হোক না স্বপ্ন মিথ্যা, কল্পনা বাস্তবতার লেশশূন্য; নাই বা থাকিল
সবসময় তাহাদের পিছনে স্বার্থকতা; তাহারাই যে জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ, তাহারা আসুক,
জীবনে অক্ষয় হোক তাহাদের আসন; তুচ্ছ স্বার্থকতা, তুচ্ছ লাভ।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, Pather Panchali: Song of the Road
“বুঝি না কেন এক-এক জাতির মধ্যে সভ্যতার কী বীজ লুক্কায়িত
থাকে, তাহারা যত দিন যায় তত উন্নতি করে─
আবার অন্য জাতি হাজার বছর ধরিয়াও সেই একস্থানে স্থাণুবৎ নিশ্চল হইয়া থাকে? বর্বর
আর্যজাতি চার-পাঁচ হাজার বছরের মধ্যে বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, কাব্য, জ্যোতির্বিদ্যা,
জ্যামিতি, চরক-সুশ্রুত লিখিল, দেশ জয় করিল, সাম্রাজ্য পত্তন করিল, ভেনাস দ্য
মিলোর মূর্তি, পার্থেনন, তাজমহল, কোলোঁ ক্যাথিড্রাল গড়িল, দরবারি কানাড়া ও ফিফথ
সিম্ফোনির সৃষ্টি করিল─ এরোপ্লেন,
জাহাজ, রেলগাড়ি, বেতার, বিদ্যুৎ আবিষ্কার করিল─
অথচ পাপুয়া, নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়ার আদিম অধিবাসীরা, আমাদের দেশের ওই মুণ্ডা,
কোল, নাগা, কুকিগণ যেখানে সেখানেই কেন রহিয়াছে এই পাঁচ হাজার বছর?”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, আরণ্যক
“জ্যোৎস্না আরো ফুটিয়াছে, নক্ষত্রদল জ্যোৎস্নালোকে প্রায়
অদৃশ্য, চারিধারে চাহিয়া মনে হয় এ সে পৃথিবী নয় এতদিন যাহাকে জানিতাম, এ
স্বপ্নভূমি, এই দিগন্তব্যাপী জ্যোৎস্নায় অপার্থিব জীবেরা এখানে নামে গভীর রাত্রে,
তারা তপস্যার বস্তু, কল্পনা ও স্বপ্নের বস্তু, বনের ফুল যারা ভালবাসে না, সুন্দরকে
চেনে না, দিগ্বলয়রেখা যাদের কখনো হাতছানি দিয়া ডাকে নাই, তাদের কাছে এ পৃথিবী
ধরা দেয় না কোনো কালেই।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, আরণ্যক
“বিপদে পড়িবার ভয়েই লোকে ভয় পায়। কিন্তু বিপদের মধ্যে পড়িলে
তখন আর সে ভয় থাকে না।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবনে সাত বৎসর
“করুনা ভালোবাসার সবচেয়ে মূল্যবান মশলা, তার গাঁথুনি বড় পাকা
হয়।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, PATHER PACHALI
“যুগে যুগে অপরাজিত জীবন-রহস্য কি অপূর্ব্ব মহিমাতেই আবার
আত্মপ্রকাশ করে!”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, Aparajito, Yang tak Terkalahkan
“বুড়ি সে কথা হজম করিয়া লইল। এরূপ অনেক কথাই তাহাকে দিনের
মধ্যে দশবার হজম করিতে হয়। সেকালের ছড়াটা সে এখনো ভোলে নাই-
লাথি ঝাঁটা পায়ের তল,
ভাত কাপড়টা বুকের বল-”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, Pather Panchali: Song of the Road
“বইখানা খুলিতেই একদল কাগজ-কাটা পোকা নিঃশব্দে বিবর্ণ মার্বেল
কাগজের নিচে হইতে বাহির হইয়া ঊর্ধ্বশ্বাসে যেদিকে দুই চোখ যায় দৌড় দিল। অপু বইখানা
নাকের কাছে লইয়া গিয়া ঘ্রাণ লইল, কেমন পুরোনো গন্ধ! মেটে রঙের পুরু পুরু পাতাগুলোর
এই গন্ধটা তাহার বড় ভালো লাগে”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, Pather Panchali : Song of the Road
“সে নিজে বেশ বুঝতে পারে, এই এক বৎসরে তাহার মনের প্রসারতা এত
বাড়িয়া গিয়াছে, এমন একটা নতুনভাবে সে জগৎটাকে, জীবনটাকে দেখিতে আরম্ভ করিয়াছে...
সে এটুকু বেশ বোঝে, কলেজে পড়িয়া ইহা হয় নাই, কোনো প্রফেসরের বক্তৃতাতেও না- যাহা
কিছু হইয়াছে, এই বড় আলমারি ভরা লাইব্রেরিটার জন্য, সে তাহার কাছে কৃতজ্ঞ। সে
যতক্ষণ লাইব্রেরিতে থাকে, ততক্ষণ তাহার খাওয়াদাওয়ার কথা তত মনে থাকে না। এই সময়টা
এক একটা খেয়ালের ঘোরে কাটে। খেয়ালমত এক একা বিষয়ে প্রশ্ন জাগে মনে, তাহার উত্তর
খুজিতে গিয়া বিকারের রোগীর মত অদম্য পিপাসায় সে সম্বন্ধে যত বই পাওয়া যায় হাতের
কাছে- পড়িতে চেষ্টা করে।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, APARAJITA – A NOVEL
“জীবনকে খুব কম মানুষেই চেনে। জন্মগত ভুল সংস্কারের চোখে সবাই
জীবনকে বুঝিবার চেষ্টা করে, দেখিবার চেষ্টা করে, দেখাও হয় না, বোঝাও হয় না। তাছাড়া
সে চেষ্টাই বা ক'জন করে?”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, APARAJITA – A NOVEL
“এ এক আলাদা জীবন, যারা ঘরের দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকিতে
ভালোবাসে না, সংসার করা যাদের রক্তে নাই, সেই সব বারমুখো, খাপছাড়া প্রকৃতির
মানুষের পক্ষে এমন জীবনই তো কাম্য। কলিকাতা হইতে প্রথম আসিয়া এখানকার এই ভীষন
নির্জনতা ও সম্পূর্ণ বন্য জীবনযাত্রা কি অসহ্য হইয়াছিল, কিন্তু এখন আমার মনে হয়
এই ভাল, এই বর্বর রুক্ষ বন্য প্রকৃতি আমাকে তার স্বাধীনতা ও মুক্তির মন্ত্রে
দীক্ষিত করিয়াছে, শহরের খাঁচার মধ্যে আর দাঁড়ে বসিয়া থাকিতে পারিব কি ? এই
পথহীন প্রান্তরের শিলাখন্ড ও শাল পলাশের বনের মধ্য দিয়া এই রকম মুক্ত আকাশতলে
পরিপূর্ণ জ্যোৎস্নায় হু- হু ঘোড়া ছুটাইয়া চলার আনন্দের সহিত আমি দুনিয়ার কোনো
সম্পদ বিনিময় করিতে চাহি না।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, আরণ্যক
“দুঃখ জীবনের বড় সম্পদ;
দৈন বড় সম্পদ; শোক, দারিদ্র, ব্যার্থতা
বড় সম্পদ, মহৎ সম্পদ।
যে জীবন শুধু ধনে মানে সার্থকতায়, সাফল্যে,
সুখে- সম্পদে ভরা, শুধুই যেখানে না চাইতে পাওয়া,
শুধুই চারিধারে প্রাচুর্যের, বিলাসের মেলা,
যে জীবন অশ্রুকে জানে না
অপমানকে জানে না, আশাহত ব্যার্থতাকে জানে না
সে জীবন মরুভুমি
সে সুখসম্পদ -ধনসম্পদ- ভরা ভয়ানক জীবনকে
আমরা যেন ভয় করতে শিখি।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়
“কিন্তু সহানুভূতি বা দুঃখ
এক জিনিস, আর তা থেকে কাজের প্রেরণা সম্পূর্ণ অন্য- বিশেষত স্বার্থপর যৌবন চায় যা নাগালের
বাইরে তাকে হাতে আঁকড়ে ধরতে, চায় তার রূপ, চায় উন্নতি, ছোট চায় বড়কে আয়ত্ত করার আত্মপ্রসাদ......
('উন্নতি' ছোটগল্প থেকে উদ্ধৃত)”
― বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কিন্নর দল
“প্রকৃতপক্ষে ঠিক মনের মতো
লোক পাওয়া বড় দুষ্কর। অনেক কষ্টে একজন হয়তো মেলে। অধিকাংশ লোকের সঙ্গে যে
আমাদের আলাপ হয়, সে সম্পূর্ন মৌখিক। তাদের সঙ্গে আমাদের হয়তো ব্যক্তিগত অভ্যাসে,
চরিত্রে, মতে, ধর্ম বিশ্বাসে বিদ্যায় যথেষ্ট তফাৎ। কিন্তু একই অফিসে কি কলেজে কি
কোর্টে একসঙ্গে কাজ করতে হয়, দুবেলা দেখা হয় - দাদা কিংবা মামা বলে সম্বোধন করতে
হয়, কৌটাস্থ পানের খিলির বিনিময়ও হয়ত হয়ে থাকে- কিন্তু ওই পর্যন্ত। মন সায়
দিয়ে বলে না তার সঙ্গে দুবেলা দেখা হলে গল্প করে বাঁচি। কোন নিরালা বাদলের দিনে
অফিসের হরিপদ-দার সঙ্গ খুব কাম্য বলে মনে হবে না।”
―
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, চিরায়ত শ্রেষ্ঠ অতিপ্রাকৃত
গল্প
“অল্প বুদ্ধি লোক আগে বিরাটকে বুঝতে চেষ্টা করে না, আগে থেকেই
সেই অনন্তের সঙ্গে একটা সম্বন্ধ পাঠিয়ে বসে থাকে। অসীমের ধারণা না হোক, সেই বড়
কল্পনাও তো একটা রস। রস উপলব্ধি করতে জানে না - আগেই ব্যগ্র হয়ে সেই অসীমকে সীমার
গন্ডিতে টেনে এনে তাঁকে ক্ষুদ্র করতে”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
“কত লোকের চিতায় ইছামতীর জল ধুয়ে নিয়ে গেল সাগরের দিকে,
জোয়ারে যায় আবার ভাঁটায় উজিয়ে আসে, এমনই বারবার করতে করতে মিশে গেল দূর সাগরের
নীল জলের বুকে। যে কত আশা করে কলাবাগান করেছিল উত্তর মাঠে, দোয়াড়ি পেতেছিল বাঁশের
কঞ্চি চিরে বুনো ঘোলডুবরির বাঁকে, আজ হয়তো তাঁর দেহের অস্থি রোদ-বৃষ্টিতে সাদা
হয়ে পড়ে রইল ইছামতীর ডাঙ্গায়। কত তরুণী সুন্দরি বধূর পায়ের চিহ্ন পরে নদী
দুধারে, ঘাটের পথে, আবার কত প্রৌঢ় বৃদ্ধার পায়ের দাগ মিলিয়ে যায়... গ্রামে
গ্রামে মঙ্গলশঙ্খের আনন্দধ্বনি বেজে ওঠে বিয়েতে, অন্নপ্রাশনে, উপনয়নে
দুর্গাপূজোয়, লক্ষ্মীপুজোয়... সেসব বধূদের পায়ের আলতা ধুয়ে যায় কালে কালে,
ধূপের ধোঁয়া ক্ষীণ হয়ে আসে... মৃত্যুকে কে চিনতে পারে, গরীয়সী মত্যমাতাকে?”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
“করুণা ভালবাসার সবচেয়ে মূল্যবান মসলা, তার গাঁথুনি বড় পাকা
হয়।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, পথের পাঁচালী
“এ এক আলাদা জীবন, যারা ঘরের দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকিতে
ভালোবাসে না, সংসার করা যাদের রক্তে নাই, সেই সব বারমুখো, খাপছাড়া প্রকৃতির
মানুষের পক্ষে এমন জীবনই তো কাম্য।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, আরণ্যক
“পরের বাড়ি যেতে হবে যে। না হয় আর এক বছর। তারা খাঁটিয়ে নেবে
তবে খেতে দেবে। বসে খেতে দেবে না। চকি ঘুম এলি তারা শোনবে না।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
“নানা প্রকার অজ্ঞানতায় ও মূঢ়তায় নিজেকে ডুবিয়ে রেখেও অজ্ঞানী
ব্যাক্তি ভাবে, আমি বেশ আছি, আমি কৃতার্থ!”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
“ছেলে অবাক হয়ে বাপের মুখের দিকে তাকায়। কি সুন্দর, নিষ্পাপ
অকলঙ্ক মুখ ওর। চাঁদে কলঙ্ক আছে কিন্তু খোকার মুখে কলঙ্কের ভাঁজও নেই।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
“দুঃখকে বাদ দিয়ে জগতে সুখ নেই- প্রকৃত সুখের অবস্থা গভীর
দুঃখের পরে... দুঃখের পূর্বের সুখ অগভীর, তরল, খেলো হয়ে পড়ে। দুঃখের পরে যে সুখ -
তার নির্মল ধারায় আত্মার স্নানযাত্রা নিষ্পন্ন হয়, জীবনের প্রকৃত আস্বাদ মিলিয়ে
দেয়। জীবনকে যারা দুঃখময় বলেছে, তারা জীবনের কিছুই জানেনা, জগৎটাকে দুঃখের মনে
করা নাস্তিকতা। জগত হলো সেই আনন্দময়ের বিলাস-বিভূতি। তবে দেখার মত মন ও চোখ
দরকার।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
“সমাজ সমাজ করে গেল এ মহা-মূর্খের দল।”
― বিভূতিভূষণ
বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছামতী
আরও পড়তে পারেন;
ছাত্র জীবনে উপার্জনের নানা উপায়
এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।