পৃথিবীতে এমন কয়েকটি ক্রেডিট কার্ড আছে, যেগুলো অনেক দামি। এই কার্ডগুলো যেকোনো মানুষ কিংবা সাধারণ মানুষ পায় না, এই কার্ডগুলো প্রোভাইড করা হয় তাদের যারা অনেক বেশি ধনী। যাদের আয় বেশি এবং যাদের অনেক বড় ব্যবসা আছে।
এই কার্ডগুলো অনেক দামি হওয়ার কারণ হলো, এই কার্ডগুলোর ডিজাইন অনেক বেশি সুন্দর এবং এই কার্ডগুলো বানানো হয় ডায়মন, গোল্ড, সিলভার ও টাইটেনিয়ামসহ পৃথিবীর অনেক দামি দামি উপকরণসমূহ। এইসব উপকরণ সমূহ আজ অবধি অন্য কোনো ক্রেডিট কার্ডে ব্যবহার করা হয়নি, এগুলো শুধুমাত্র বিশ্বের সবথেকে দামি ক্রেডিট কার্ডেই ব্যবহার করা হয়েছে। এই কার্ডগুলোতে রয়েছে অসংখ্য অফার এবং অনেক বেশি সুবিধা। যা কি না হাতে পাওয়া মানে অনেকটা চাঁদ হাতে পাওয়ার সমান।
আজকে আমরা এই জানবো বিশ্বের এমনই পাঁচটি সবথেকে দামি ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে, তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
১. American express centurion card - অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস সেনচুরিয়ান কার্ড
অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস সেনচুরিয়ান কার্ডটি মূলত অ্যামেক্স ব্লাক কার্ড হিসেবে পরিচিত। এটি ১৯৯৯ সালে অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস সর্বপ্রথম তাঁরা এই চালু করেন। এই কার্ডটি দেখতে অনেক আকর্ষণীয়। এটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে টাইটেনিয়াম ধাতু। এই কার্ডটির রঙ কালো। এই কার্ডটি অন্যান্য ক্রেডিট কার্ডের থেকে অনেক বেশি ভারি। এই কার্ডটি নিতে হলে এক বছরে আপনার অ্যামেক্স একাউন্টে কমপক্ষে ২ লক্ষ ৫০ হাজার ডলার বাংলাদেশি টাকায় ২ কোটি টাকার বেশি ট্রানজেকশন বা লেনদেন থাকতে হবে। যাদের দুই কোটি টাকার বেশি এক বছরে ট্রানজেকশন থাকে শুধুমাত্র তাদের অ্যামেক্স এই কার্ডটি নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ করে।
এই কার্ডটিতে যুক্ত হওয়ার জন্য ১০ হাজার ডলার বা ১০ লক্ষ টাকা ফী দিতে হবে এবং এই কার্ডটির বার্ষিক ফী ৫ হাজার ডলার বাংলাদেশি টাকায় ৫ লক্ষ টাকা। এই কার্ডে কোনো নির্দিষ্ঠ লিমিটস নেই, গ্রাহকরা যেকোনো পরিমাণ লেনদেন বা ট্রাজেকশন করতে পারবে।
এই কার্ডটিতে রয়েছে অসংখ্য হোটেল, রিসোর্ট ইত্যাদিতে আনলিমিটেড অফার। এই কার্ডটি এ পর্যন্ত কতজন নিয়েছে তাঁরা এটা গোপন রেখেছে, এটা তাঁরা আজ অবধি পর্যন্ত প্রকাশ করেননি।
২. Dubai first royale mastercard - দুবাই ফার্স্ট রয়েল মাস্টারকার্ড
দুবাই ফার্স্ট রয়েল মাস্টারকার্ডকে বর্তমান অবধি বিশ্বের সবথেকে দামি কার্ড হিসেবে পরিচিত। এই কার্ড নেয়ার জন্য শুধুমাত্র পৃথিবীর সবথেকে ধনী ব্যাক্তিদের আমন্ত্রণ করা হয় তাছাড়া অন্য কোনো সাধারণ ব্যাক্তি এই কার্ডটি নিতে পারেনা। এই কার্ডটি প্রথম চালু করার সময় দুবাই ফার্স্ট ব্যাংকের মাত্র দুইশত জনকে প্রথম দেয়া হয়েছিলো।
এই কার্ডটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে .২৩৫ ক্যারেটের ডায়মন এবং চারপাশে রয়েছে কালো টোন এবং এই কার্ডের দুই প্রান্ত সোনা দিয়ে মোড়ানো।
এই কার্ডটি নিতে খরচ করতে হবে ৭০০০ দিরহাম বা ১৯০০ ডলার। তবে এই কার্ডে কোনো বার্ষিক ফী নেই, এই কার্ডটি গ্রাহকদের জন্য একদম ফ্রী। তবে এই কার্ডটি যে কাউকে দেয়া হয় না। এই কার্ডটিতে রয়েছে অনেক বেশি অফার। দুবাইর অনেক হোটেলে রয়েছে আনলিমিটেড অফার এবং বিভিন্ন রিসোর্টে রয়েছে ফ্রী থাকার ব্যবস্থা এবং তাদের জন্য রয়েছে জীপ, ভ্রমণসহ পৃথিবীর দারুণ দারুণ সব অফার।
৩. JP morgan chase plagiarism card - জেপি মর্গান ক্যাচ প্লাগিয়ারিজম কার্ড
যুক্তরাষ্ট্রের কমার্শিয়াল ব্যাংক এই কার্ডটি তৈরি করে। এই কার্ডটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে প্যালাডিয়াম, সিলভার এবং সোনার সংমিশ্রণে। এই কার্ডটির দাম ১ হাজার ডলার। এই কার্ডটি নেয়ার ক্ষেত্রে বার্ষিক ফী দিতে হবে ৬৯৫ ডলার। জেপি মর্গানের শীর্ষ কাস্টমারদের শুধুমাত্র এই কার্ডটি তাদের আমন্ত্রণের জন্য দেয়া হয় তাছাড়া অন্য কাউকে দেয়া হয় না।
এই কার্ডটি নিতে হলে কমপক্ষে সেই ব্যাংকে অন্তত ১০ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ৮০ কোটি টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। যারা এই ইনভেস্ট করবে শুধুমাত্র তাদেরকেই এই কার্ডটি প্রোভাইড করা হয় ইনভাইটেশনের মাধ্যমে। এই কার্ডটিতে রয়েছে অনেক বেশি অফার, ৫ তারকা হোটেলে রয়েছে দারুণ সব অফার ও ডিনারের ব্যবস্থা এবং এই কার্ডটিতে ভ্রমনেও রয়েছে অসংখ্য দারুণ সব অফার। এবং এই কার্ডে নির্দিষ্ট কোনো লিমিটস নেই কাস্টমার চাইলে যেকোনো পরিমাণ ডলার ব্যবহার করতে পারবে বা উত্তোলন করতে পারবে।
৪. Sberbank visa infinite gold card - এসবিইআর ব্যাংক ভিসা ইনফিনিট গোল্ড কার্ড
কাজাখাস্তানের ব্যাংক এসবিইআর এই কার্ডটি দিয়ে থাকে তাদের নির্বাচিত দামি কাস্টমারদের। এই কার্ডের ডিজাইনটা দারুণ এবং দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। এই কার্ডটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ২৪ ক্যারেটের খাঁটি সোনা। ২৬টি দশমিক ১৭ ক্যারেটের ডায়মন এছাড়াও রয়েছে আরও কিছু দারুণ উপকরণ। এই কার্ডটি প্রথম চালুর সময় মাত্র ১০০ জনকে দেয়া হয়েছিলো।
এই কার্ডটি নিতে হলে বার্ষিক ফী হিসেবে দিতে হবে ২ হাজার ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ২ লক্ষে টাকার বেশি। কাজাখাস্তানের বাসিন্দাদের এই কার্ডটি পেতে ১ লক্ষ ডলার বা ১ কোটি টাকার বেশি খরচ করতে হবে। এই কার্ডের মালিক পাবে ২ লক্ষ ডলার ইন্সুরেন্স বেনিফিট এবং এই কার্ডে রয়েছে অনেক দামি দামি অফার যা পৃথিবীর অন্য কোনো কার্ডে নেই।
৫. লাক্সারিয়াস মাস্টারকার্ড গোল্ড - Luxurious mastercard gold
লাক্সারিয়াস মাস্টারকার্ড গোল্ড এর ডিজাইনটা দেখতে দারুণ আকর্ষণীয়। এই কার্ডটি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে ২৪ ক্যারেটের খাঁটি সোনা, স্টেইনলিস স্টিল এবং কার্বণ ব্যাগ দিয়ে। এই কার্ডটির ওজন ২২ গ্রাম। এই কার্ডটি নিতে হলে বার্ষিক ফী দিতে হবে ৯৯৫ ডলার। তবে এই এই কার্ড মেম্বারদের ২০০ ডলার করে দেয়া হয় মাস্টার কার্ড থেকে প্রতি বছর ভ্রমণের জন্য। এবং এই কার্ডের ইনসুরেন্স বেনিফিট হিসেবে কাস্টমাররা পেয়ে থাকেন আড়াই লক্ষ ডলার পর্যন্ত।
এই কার্ডটি দিয়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে রয়েছে অনেক অফার, বিমানে রয়েছে অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধাসহ অনেক হোটেল কিংবা লান্স ফিচার কিংবা অনেক দামি রিসোর্টে নানা অফারসহ অসংখ্য সুযোগ সুবিধা রয়েছে এই কার্ডটিতে।
Read More
এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।