যেভাবে খুলবেন ইস্টার্ণ (ইবিএল) ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট বিস্তারিত

Nir
0

ইস্টার্ণ স্টুডেন্ট একাউন্ট - ভূমিকা 

ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট হলো এক ধরনের সঞ্চয়ী একাউন্ট। বর্তমান সময় ইস্টার্ণ ব্যাংকের ডেবিট মাস্টারকার্ড অনেক বেশি জনপ্রিয়। ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয়ী অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষের ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্টের ব্যবস্থা করেছে।

 

ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

ছাত্র অবস্থায় আমাদের অনেক সময় টাকা জমানোর প্রয়োজন হয়। যেমন আমার প্রয়োজন হয়েছিলো। ব্যাক্তিগত ভাবে আমি টিউশনি করাই ফলে ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার জন্য টাকা জমানোর প্রয়োজন হওয়ায় আমার জন্য একাউন্ট খুলেছিলাম। আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের শেয়ার করবো কীভাবে আপনি খুব সহজে একটি স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলবেন। তো চলুন শুরু করা যাক।

 

ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট - সুবিধা ও অসুবিধা

শিক্ষার্থীদের জন্য ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট বেস্ট। এদের সার্ভিস অনেক ভালো। এদের রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু সুবিধা তবে সুবিধার পাশাপাশি দুই একটা অসুবিধাও রয়েছে। আসুন জেনে নেই সেগুলো;

 

সুবিধাসমূহ;

  • আকর্ষণীয় ইন্টারেস্ট রেট।
  • ইন্টারেস্ট পাবেন প্রতিদিনের ব্যালেঞ্চের উপর ভিত্তি করে। 
  • ডুয়েল কারেন্সি ডেবিট কার্ড (মাস্টারকার্ড)।
  • কোনো প্রকার একাউন্ট মেইন্টিনেন্ট ফী নেই। 
  • চেক বই।
  • সকল ইবিএল এটিএম বুত থেকে টাকা উত্তোলন সম্পূর্ণ ফ্রী। 
  • ফ্রী অনলাইন ব্যাংকিং সার্ভিস।
  • আপনি ব্যালেন্স একেবারে জিরো করতে পারবেন। 
  • একাউন্ট ওপেনিং চার্জ ৫০০ (এটা আপনার একাউন্টে যুক্ত হবে, যেকোনো সময় তুলে নিতে পারবেন। 

 

ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট - প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

ইস্টার্ণ (ইবিএল) ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ১৮-২৮ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। 
  • জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্মসনদ অথবা পাসপোর্ট (যেকোনো একটা)।
  • নিজের পাসপোর্ট সাইজের ছবি ৪ কপি। 
  • স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • নমিনীর ছবি ১ কপি। 
  • নমিনীর ছবি জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্মসনদ অথবা পাসপোর্ট (যেকোনো একটা) ফটোকপি।
  • ইউটিলিটি বিলের কপি ১ কপি (বিদ্যুৎ বিল অথবা বাসার যেকোনো বিলের কপি হলেই হবে)।  
  • ইনকাম সোর্স ডকুমেন্ট।
  • ই-টিন (যদি থাকে)

 

ইনকাম সোর্স ডকুমেন্ট

ইনকাম সোর্স ডকুমেন্ট। (নিজের না থাকলে পরিবারের যে কারও নিয়ে যেতে পারেন যেমন বাবা, মা অথবা ভাইয়ের ইনকাম সোর্সের কাগজ এক কপি অথবা তার কোম্পানির আইডি অথবা যদি আপনি ফ্রীল্যান্সার হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার ইনকামের একটা স্ক্রিনশট পেমেন্টের। আপনি টিউশনি করলে সেক্ষেত্রে অথোরাইজড লেটার লিখতে পারেন। 

 

ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট - যেভাবে করবেন একাউন্ট

প্রয়োজনীয় সমস্থ ডকুমেন্ট নিয়ে আপনার শহরের নিকটস্থ ইস্টার্ণ ব্যাংক ব্রান্সে যাবেন। তারপর সরাসরি অফিসে ঢুকে জিজ্ঞেস করবেন ওখানকার যেকোনো কর্মচারিকে, "ভাই/স্যার/আঙ্কেল আমি স্টুডেন্ট একাউন্ট করবো। কোনদিকে একাউন্ট করতে হয়? আমি স্টুডেন্ট একাউন্ট করতে চাই, ইবিএল ক্যাম্পাস একাউন্ট" তাঁরা দেখিয়ে দিবে।


তারপর গিয়ে সেখানে বসুন। সেখানকার কর্মরত লোকটি আপনাকে জিজ্ঞেস করবে কোন ধরনের একাউন্ট খুলতে চান আপনি? আপনি বলুন, আমি ইবিএল ক্যাম্পাস একাউন্ট খুলতে চাই। আপনার থেকে তাঁরা ডকুমেন্টগুলো চাইবে, আপনি ডকুমেন্টগুলো তাদেরকে দিন। 

  • এক কপি ভোটার কার্ডের ফটোকপি। ভোটার কার্ডের ক্ষেত্রে অনলাইন প্রিন্টটা নিয়ে যান কোনো সমস্যা নাই।
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ডটা ফটোকপি করে নিয়ে যাবেন। 
  • সদ্য তোলা ৪ কপি ছবি নিয়ে যাবেন। 
  • নমিনী আপনি যে কাউকে করতে পারেন। তবে যার করবেন যেমন বাবা অথবা মা তার ভোটার আইডি কার্ড আর ২ কপি ছবি নমিনীর জন্য নিয়ে যাবেন তবে লাগবে ১ কপি। 
  • ইনকাম সোর্সের কোনো ডকুমেন্ট না থাকাপরিবারের যেকারও ইনকাম সোর্সের কপি নিয়ে যাবেন।
  • বাসার কারেন্ট বিলের কপি নিয়ে যাবেন এক কপি।

এইসব কাগজ আপনি নিয়ে যান। তাদেরকে দেখান। তাঁরা দেখে কিছু প্রশ্ন করলে উত্তর দিন। অন্য কিছু চাইলে বলবেন আমি ১৬২৩০ এ ফোন দিয়ে যা যা বলছে তাই নিয়ে আসছি। এটা ইস্টার্ন ব্যাংক হেল্প লাইন নাম্বার।

 

এরপর তাঁরা আপনাকে একটা ফরম দিবে। নিখুঁতভাবে পূরন করুণ। কোনো বিষয় না বুজলে তাদের জিজ্ঞেস করুণ। 


ফরমটা পূরন করে তাদের দিন। তাঁরা কম্পিউটারে সব এন্ট্রি করে আপনার কাজ সম্পূর্ণ করে দিবে। আপনাকে আধা ঘন্টার মতো বসে থাকতে হবে তাদের কাছে। তাঁরা যা যা বলবে তা তা করুণ।

 

সর্বশেষ একাউন্ট হওয়ার পর আপনি আপনার একাউন্টে ৫০০৳ জমা রাখুন। এটা জমা রাখার সাথে সাথে আপনার একাউন্ট এক্টিভ হয়ে যাবে। 

 

ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট - যেভাবে করবেন ডেবিট কার্ড আবেদন

ডেবিট কার্ড আবেদনের জন্য দিতে হবে ৫৭৫ টাকা। আপনি চাইলে ওখানেই আবেদন করতে পারেন। অথবা বাসায় এসে ইস্টার্ণ ব্যাংকের কল সেন্টার থেকেও কল দিয়ে আবেদন করতে পারবেন। আপনার এই ব্যালেন্সটা কাটবে একাউন্ট থেকে। ফলে বারতি কোনো টাকা দিতে হয় না। এ জন্য আপনার একাউন্টে থাকতে হবে ৫৭৫ টাকা। 


আপনি যদি শুধু ৫০০টাকা জমা দেন সেক্ষেত্রে হবেনা ডেবিট কার্ড আবেদন। এক্ষেত্রে আপনি বাসায় এসে বিকাশ থেকে আরও ১০০টাকা আপনার একাউন্ট নাম্বারে জমা দিন। বিকাশ থেকে কীভাবে ইস্টার্ণ ব্যাংকে টাকা জমা রাখবেন নিচের পোস্টটিতে গিয়ে দেখতে পারেন। 

যেভাবে বিকাশ থেকে যেকোনো ব্যাংকে টাকা রাখবেন 

এখন আপনার কাজ হলো আপনি একাউন্ট করার সময় যে নাম্বার সেখানে দিয়েছিলেন সেই নাম্বার থেকে ফোন দিন 16230 নাম্বারে। আবারও বলছি যে নাম্বার দিয়ে একাউন্ট করেছিলেন সেই নাম্বারটা দিয়ে ফোন দিন, তাছাড়া অন্য কোনো নাম্বার দিয়ে ফোন দিলে হবে না। আপনাকে স্বাগতম জানাবে। বাংলা জন্য ১ চাপুন। এরপর ০ চাপুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর একজন পুরুষ অথবা নারী আপনার ফোন ধরবে। আপনাকে বলবে, আমি কি (আপনার নাম) সাথে কথা বলছি? কাইন্ডলি একটু জানাবেন। জিজ্ঞেস করবে কিভাবে সাহায্য করতে পারি স্যার?

 

আপনি বলুন আমি ইবিএল ডেবিট মাস্টারকার্ডের জন্য আবেদন করতে চাই।

 

তখন তিনি আপনাকে কয়েকটা প্রশ্ন করবে যেমন আপনার জন্মসাল কত। আপনার লাস্ট ব্যালেন্স কত জমা রেখেছেন। নমিনী কাকে দিয়েছেন। আপনি যা যা ব্যাংকে তথ্য দিয়েছেন তার থেকেই। এটা তাঁরা করে নিশ্চিত হওয়ার জন্য যে এটা আপনারই একাউন্ট। ভ্যারিফাইর জন্য। 


সঠিকভাবে উত্তর দেয়ার পর আপনার কাছ থেকে তাঁরা কিছুটা সময় চাইবে। দিন কিছুটা সময়। তারপর তাঁরাই সব কাজ করে দিবে। আপনি শুধু শুনতে থাকুন। আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তাকে করতে পারেন। হাজারটা প্রশ্ন হলেও।

 

আপনি আবেদন করার এক সপ্তাহ পর আপনি যে ব্রান্সে গিয়ে একাউন্ট খুলেছেন ওই ব্রান্সে গিয়ে যেই লোকটার সামনে বসে একাউন্ট করেছেন তাকে কার্ডের কথা বলুন যে এক সপ্তাহ আগে আপনি কার্ড অর্ডার করেছেন। তাঁরা আপনাকে ঢাকা থেকে আসা সুন্দর ইবিএল এর ডেবিট ডুয়েল কারেন্সি মাস্টারকার্ডটা দিয়ে দিবে।

 

ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট -শেষ কাজ

ডেবিট কার্ডটি হাতে পাওয়ার পর আপনার কাজ হলো কার্ডটাকে আপনাকে এক্টিভ করতে হবে। আপনি 16230 এ ফোন করে বাংলার জন্য ১ এবং কল সেন্টারে কথা বলার জন্য ০ চাপতে হবে। একজন ব্যাক্তি আপনার সাথে কথা বলবে, তাকে বলুন আপনি আপনার কার্ডটি এক্টিভ করতে চান। তিনি এক্টিভ করে দিবেন। আপনার কার্ডের জন্য তিনি আপনাকে একটি পিন তৈরি করে দিবে চার ডিজিটের যে পিনটি ইউজ করতে চান আপনাকে বলতে হবে। অথবা কার্ডটি এটিএম বুথ এ গিয়ে সেখানে ঢুকিয়ে ও খুব সহজে মিনিটের মধ্যে আপনি আপনার কার্ডটা এক্টিভ করতে পারেন। ডেবিট কার্ড এক্টিভ করার সকল নিয়ম সম্পর্কে জানতে নিচের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন;

যেভাবে এক্টিভেট করবেন ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড

আপনার ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে যাবতীয় প্রশ্ন আপনি করুণ 16230 এ ফোন দিয়ে অন্য কাউকে না বলে। সেক্ষেত্রে এই নাম্বারে ফোন দিয়ে ১ চাপতে বললে চাপুন তারপর ০ চাপতে বললে চাপুন তাহলে যিনি ফোন ধরবেন তাকে জিজ্ঞেস করুণ। উত্তর পেয়ে যাবেন অসংখ্য।

 

ডুয়েল কারেন্সি কার্ডে ডলার ব্যবহার করতে যা করতে হয়

যেকোনো ডুয়েল কারেন্সি কার্ড ব্যবহারের জন্য পাসপোর্ট ইন্ডোর্সমেন্ট করতে হয়। আপনার পাসপোর্ট থাকলে পাসপোর্ট ও কার্ড সহ ব্রান্সে নিয়ে গিয়ে তাদের বলুন তাঁরা ইন্ডোর্সমেন্ট করে দিবে পাসপোর্টটি তখন আপনি ডলার ব্যবহার করতে পারবেন। 

 

ইস্টার্ণ ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট - পরিশিষ্ঠ

বর্তমান সময়ে ইস্টার্ণ ব্যাংকের মাস্টারকার্ড অনেক জনপ্রিয় একটি ডেবিট কার্ড। বিশেষ করে অনলাইন ট্রানজেকশনের ক্ষেত্রে। খুবই দ্রুত ট্রানজেকশন করা যায় অনলাইনে যেকোনো ইন্টারন্যাশনাল ওয়েবসাইটে। বিশেষকরে ফেসবুক বুস্টিং এ বেশ ভালো কাজ করে এই কার্ড।

আশাকরি আমার এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে করতে পারেন, উত্তর পেয়ে যাবেন। 

 

আরও পড়ুন

যেভাবে খুলবেন এবি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট বিস্তারিত

যেভাবে খুলবেন সিটি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট বিস্তারিত

Post a Comment

0Comments

এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!