মুখস্থ বিদ্যা, লাইফ ধ্বংসের ওস্তাদ

Nir
0
কি, শিরোনাম দেখে অবাক হলেন হলেন নাকি? না, অবাক হওয়া যাবে না। এখানে অবাকের কিছু নেই। কেউ কেউ শিরোনাম দেখে প্রচণ্ড মাত্রায় রাগও হয়েছেন হয়তো, আবার অনেকেই বেশ খুশি হয়েছে। আমি তাদের নাম বলবো না। নাম বললে চাকরি থাকবে না। (হাস্যকর, আমি আসলে নামই জানি না) যারা রাগ হলেন, কেনো রাগ হলেন? (আপনি মুখস্থ বিদ্যায় পটু, তাই তো... নাকি অন্য কিছু ভালো বা খারাপ?) , আর যারা খুশি হয়েছেন খুশির কারণ কি (আর মুখস্থ করবেন না, নাকি মুখস্থ বিদ্যার বিরুদ্ধে লড়াই একজন পাইছেন বলে, নাকি অন্যকিছু ভালো কিংবা খারাপ? 
 
আমি কিন্তু আগেই বলে নিচ্ছি, আমি পুরোপুরি মুখস্থ বিদ্যার বিরোধী নই।

"মুখস্থ বিদ্যার সিমাবদ্ধতা রয়েছে"

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা হয়ে গেছে সম্পূর্ণ সিলেবাস ভিত্তিক। সিলেবাস মুখস্থ করতে হবে, খেয়ে ফেলতে হবে পুরা সিলেবাস। একগাদা তথ্য মুখস্থ করে পরিক্ষা দিতে হবে। (শিক্ষক/পিতা-মাতার উপদেশ) অন্য কোনো বই পড়া যাবে না। ফিকশন কিংবা নন-ফিকশ্ন কোনো বই হাতে নিলে, পড়তে বসলে মিতা-মাতা কিংবা শিক্ষক মহাশয় জানতে পারলে বলেন, এসব ফালতু বই না পড়ে একাডেমিক বই পড়ো। মুখস্থ কর!

"পাশ দে মা ভিক্ষা,
কিছুদিন পর পরিক্ষা"

আপনে মুখস্থ বিদ্যায় ভালো শিক্ষার্থী হইছেন তো মরছেন। স্কুল লাইফে সব সময় প্রথম, তবে সেটা মুখস্থ বিদ্যায়। এ+ তুলছেন মুখস্থ বিদ্যায়।

"মুখস্থ বিদ্যাও হলো অনেকটা নকল বাহিনি"

ক্লাসের মদ্ধে বর্ষমধ্য কিংবা সমাপনী পরিক্ষায় আপনি পুরা বইয়ের কমন কমন একগাদা পড়ার ঝুলি পড়াগুলো সব মুখস্থ করে গেছেন, আর আরেকজন ব্যাক্তি নকল করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো লিখে নিয়ে গেছে একখানা খাতায় নকল করবার জন্য। আপনি অনেক কষ্ট করে পড়া মুখস্থ করে পরিক্ষা দিলেন মুখস্থ বিদ্যায়, আর আরেকজন নকল করে পরিক্ষা দিলো। তাহলে আপনাদের দুজনের মদ্ধে পার্থক্য কি জানেন "একই গুয়ালের গরু" অবাক হলেন নাকি? অবাক হওয়ার কিছুই নাই একটু ক্লিয়ার করে বলি, আপনি যা যা মুখস্থ করেছেন সব কমন, লিখছেন অনেক ভালো মানে ফাটাফাটি পরিক্ষা দিছেন। আপনার আর মুখস্থ করা প্রশ্নগুলোর প্রয়োজন নাই, যে-কোনো মূহুর্তে আপনি ভুলে যেতে পারেন সব প্রশ্ন। অপরদিকে ওই নকল নিয়ে যাওয়া ছাত্রের ও সব কমন পড়েছে, লিখেছে সেই নকল দেখে দেখে। তার আর ওই নকলের প্রয়োজন নাই। ওই ব্যাটায় উত্তরগুলো ফালায় দিবে, আর আপনি মাথা থেকে সব বের করে দিবেন। এখন ভাবুন, আপনি আর ওই নকলকারী কি একই গোয়ালের গরু না?

অতএব বুঝে বুঝে পড়ার চর্চা করুন।

এখন ভাবতে পারেন, মুখস্থ করবো নাতো কি করবো? এই প্রশ্নের অপেক্ষায় ছিলাম এতোক্ষন। মুখস্থ করার প্রয়োজন নাই তো আপনার, আপনাকে যা পড়তে হবে সবটাই বুঝে বুঝে পড়তে হবে।

মুখস্থ যে করবেন না তা নয়, তবে যাই মুখস্থ করবেন মুঝে মুঝে বুঝে করবেন।

এবার আমি দুইটা পড়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিলাম,
 
১। বুঝে বুঝে পড়া ও 
২। মুখস্থ বিদ্যা

বুঝে বুঝে পড়াঃ আপনি যাই পড়বেন তা আপনাকে বুঝে বুঝে পড়তে হবে। ভুলেও কোনো পড়া না বুঝে মুখস্থ করবেন না। দেখবেন সেই পড়াটা আর সহজে ভুলে যাবেন না। আপনি নিজের ভাষায় নিজের মতো করে পরিক্ষায় লিখতে পারবেন। ফলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কম থাকবে।
মুখস্থ যে করবেন না শুধু তাই নয়, তবে যাই মুখস্থ করুন তা বুঝে বুঝে মুখস্থ করতে হবে।

পড়া না বুঝে মুখস্থ করাটা একটা বদ অভ্যাস

আপনি কি পড়ছেন, কেনো পড়ছেন, আসলে বিষয়টি কি সম্পর্কে বলা হয়েছে, এর মূল আলোচনা কি আগে সবটা ভালো ভাবে বুঝে নিন।
মোটেও একগাদা প্রশ্ন ঝাড়া মুখস্থ করতে যাবেন না, এতে আপনারেই ক্ষতি। পড়িক্ষার হলে গিয়ে ভুলে গেলে আমতা আমতা করতে হবে। একটা শব্দও মাথা থেকে বেরুবে না।

অতএব যাই পড়বেন তা বুঝে বুঝে পড়ুন। এতে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা অতন্তই কম।

"তবে নিজের পড়া মাঝে মাঝে একটু ঝালাই করে নিবেন"

মুখস্থঃ আমি আগেই বলেছি, মুখস্থ করার একটা সিমাবদ্ধতা রয়েছে। যেগুলো মুখস্থ করতে হবে তা মুখস্থ করবেন অবস্যই। কিন্তু অনেক কিছুই আছে যা মুখস্থ বিদ্যায় কাজ হবে না। ভুলে গেলেই সর্বনাশ। বিশেষ করে গনিত, পদার্থ, রসায়ন আর জীববিজ্ঞান এর ক্ষেত্রে মোটেও না বুঝে মুখস্থ করবেন না। যেমন বিভিন্ন সূত্র, সূত্র অবস্যই মুখস্থ করবেন, কারণ এটা মুখস্থ করারই জিনিষ, তবে ওই সূত্রটা আগে বুঝুন, তারপর মুখস্থ করুন যেমন ক্যালকুলাসের বিভিন্ন সূত্র, গনিতেরও।
যাই মুখস্থ করুন না কেনো, তা অবস্যই বুঝে বুঝে মুখস্থ করতে হবে।
অন্যান্য আর্টিকেল;

হ্যাপি লার্নিং

Post a Comment

0Comments

এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!