গণটিকার সনদ সংগ্রহ |
আমি নিজে গণ টিকা কার্যক্রম চলাকালীন সময় কোনো প্রকার জন্মসনদ বা ভোটার ছাড়াই গণটিকা দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে বাই রোডে ভারত ভ্রমণের তাগিদে ভারত যাওয়ার প্রয়োজন হয়, কিন্তু বর্ডারে ইমিগ্রেশনে কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট ছাড়া ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ হয়না, যদিও বাই বিমানে যাওয়া যায় বটে কিন্তু বাই রোডে এখনো কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট ছাড়া ভারতে যাওয়া যায় না। ফলে পরে যাই বিপদে। তবে পরবর্তীতে আমি গণ টিকা থাকা অবস্থাতেই কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট পেয়ে যাই। কিভাবে আমি গণ টিকা সনদ সংগ্রহ সংগ্রহ করি, সেই বিষয়েই আলোচনা করবো এই নিবন্ধে।
অনেকেই গণটিকা দিয়েছেন বা ইতোমধ্যে টিকা দিয়েছেন কোনোপ্রকার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই, কিন্তু এখন করোনা সার্টিফিকেট প্রয়োজন কিন্তু কোনো প্রকার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ভ্যাক্সিন দেয়ার দরুন সার্টিফিকেট পাচ্ছেন না। আজকের এই নিবন্ধে আমি তাদের দেখাবো কিভাবে গণটিকার সনদ সংগ্রহ করবেন।
গণটিকা সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো
আমি নিজে গণটিকা দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে আমার প্রয়োজন হয় কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট। এর জন্য আমি নানা জায়গায় যোগাযোগ করি, নানা জনকে বলি গণটিকা সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো? পরবর্তীতে জানতে পারি, সিটি কর্পোরেশন যেতে হবে এবং সেখানে কোভিড টিকাদান সেকশনে যোগাযোগ করলেই এর সুরাহা হয়ে যাবে।
এটা শোনার পর তৎক্ষণাৎ কালবিলম্ব না করে চলে যাই সিটি কর্পোরেশন। সেখানে গিয়ে অপরিচিত কাউকে জিজ্ঞেস করি টিকাদান সেকশন কোন দিকে? রুম নাম্বার বলে দেন অপরিচিত ব্যাক্তিটি। সেখানে গিয়ে অনুমতি নিয়ে রুমে প্রবেশ করলে তিনি বসতে বলেন ভদ্রতার শোহিত। জিজ্ঞেস করেন প্রয়োজনের কথা।
তাকে আমার সমস্যার কথা খুলে বলি। তাকে বলি, আমাকে ভারতে যেতে হবে কিন্তু আমার গণটিকা সার্টিফিকেট প্রয়োজন। কিন্তু আমি গণটিকা দেয়ার দরুন কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট পাচ্ছিনা। আমি কিভাবে গণটিকার সনদ সংগ্রহ করতে পারি? তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন আমি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছি কিনা ইতোমধ্যে। উত্তরে আমি বলি, না। তখন তিনি অনলাইনে কোভিড ভ্যাক্সিন গ্রহনের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে বলেন। তখন আমি প্রশ্ন করি, আবার ভ্যাক্সিন পুশ করে দিবে না তো? তখন তিনি বলেন, আরে না, ভ্যাক্সিন তো আপনি দিছেন আর দিবেনা। এবং অবশ্যই কেন্দ্র রংপুর মেডিকেল কলেজ দিবেন। এবং আপনার পাসপোর্ট জন্মসনদ বা ভোঁটার যেটি দিয়ে করা আছে সেটি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন।
উল্লেখ্যঃ আপনাকে অবশ্যই সেই কেন্দ্রটি সেলেক্ট করতে হবে যেটি সিটি কর্পোরেশনে কোভিড ভ্যাকসিন সেকশনে কর্মরত ব্যাক্তিটি যেই কেন্দ্রের কথা বলবে। যদি তিনি না বলেন তবে অবশ্যই তাকে জিজ্ঞেস করবেন। কারণ ভুলে যাওয়ার দরুন অনেক সময় নাও বলতে পারে। এবং অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট যেটি দিয়ে করা আছে সেটি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন। যেমন আপনার পাসপোর্ট যদি এনআইডি দিয়ে করা থাকে তবে কোভিড ১৯ নিবন্ধন করুণ এনআইডি দিয়ে। অথবা জন্মসনদ থাকলে জন্মসনদ দিয়ে।
সিটি কর্পোরেশন থেকে বেরিয়ে একটা কম্পিউটার দোকান থেকে কোভিড ভ্যাক্সিন রেজিস্ট্রেশন করে কোভিড টিকা সনদ ডাউনলোড দিয়ে প্রিন্ট করে নেই। কেন্দ্র হিসেবে সেলেক্ট করি যেটি সিটি কর্পোরেশনের কর্মরত ব্যাক্তিটি বলেছেন। এবং কোভিড ১৯ রেজিস্ট্রেশন করি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে। কারণ আমার পাসপোর্টটি করা ছিলো জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে। কম্পিউটার দোকানদারকে দিতে হয় চল্লিশ টাকা। অনেকের কাছে এটা বেশি লাগতে পারে। তবে আপনি চাইলে নিজেই ফোন থেকেই আবেদন করে কোনো একটা কম্পিউটারের দোকান থেকে দশ টাকার বিনিময়ে প্রিন্ট করে নিতে পারেন। কিভাবে কোভিড টিকা গ্রহন রেজিস্ট্রেশন করবেন জানতে পড়ুন নিচের নিবন্ধটি।
কোভিড টিকা গ্রহন নিবন্ধন
টিকা কার্ড ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে চলে যাই আবার যেখানে প্রথমে গিয়েছি অর্থাৎ সিটি কর্পোরেশন টিকাদান সেকশনে। তিনি আমার টিকাদান কার্ডটি নিয়ে সেখানকার কিউআর কোডটি স্ক্যান করেন এবং তারপর তারিখ লিখে দিয়ে বলেন আপনার কাজ হয়ে গেছে। এবং তিনি বলেন, এখন আপনাকে একমাস পর আসতে হবে দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার জন্য অর্থাৎ দ্বিতীয় ডোজ এভাবে আপডেট করার জন্য এবং তখন এই কার্ডটিই সাথে নিয়ে আসতে হবে। এখন আপনি চাইলে প্রথম ডোজের ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে করতে পারবেন অনলাইন থেকে।
তখন আমি প্রশ্ন করি, কোনোভাবে কি ২য় ডোজ সহ দুই এক দিনের মধ্যে সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে না? আমার তো খুব তারাতারি দরকার। তিনি বলেন, না এটা সম্ভব না। যদি ১ মাস আগে রেজিস্ট্রেশন করা থাকতো তবে এটা করা যেতো। একসাথে একদিনে দুইটা ডোজই আপডেট হতো। এখন আপনাকে একটু কষ্ট করতে হবে।
তারপর ১ মাস পর আবার যাই সিটি কর্পোরেশনে। গিয়েই তিনি আমাকে আপডেট করে দেন দ্বিতীয় ডোজ। এবং সেখান থেকেই তিনি আমার পাসপোর্ট নং যুক্ত করা সহ একটা সার্টিফিকেট ওখান থেকেই ডাউনলোড করে দেন।
এই হলো আমার গণটিকা সনদ সার্টিফিকেট পাওয়ার অভিজ্ঞতা। এভাবেই আমি পেয়েছি গণটিকা সার্টিফিকেট। অনুরূপভাবে আপনিও পেতে পারেন গণটিকা সনদ।
একনজরে গণটিকার সনদ সংগ্রহের উপায়ঃ
নিচে একনজরে গণটিকা সনদ সংগ্রহের নিয়ম দেয়া হলো;
- প্রথমে অনলাইনে কোভিড ১৯ ভ্যাক্সিন গ্রহণ রেজিস্ট্রেশন করুণ এবং টিকা গ্রহণ কার্ড প্রিন্ট করে নিন।
- এরপর সিটি কর্পোরেশনে যান এবং তাকে টিকা গ্রহণ কার্ডটি দেখান।
- তিনি প্রথম ডোজ সাবমিট করে দিবেন।
- ১ মাস পর আবার সিটি কর্পোরেশনে যান। তখন দ্বিতীয় ডোজ সাবমিট করে দিবে।
- সর্বশেষ অনলাইন থেকে গণটিকা সনদ বা কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে নিন।
শেষ কথা
আশাকরি আমরা এই নিবন্ধের মাধ্যমে গণটিকার সনদ সংগ্রহ কিভাবে করা যায় পা গণটিকা সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এই নিবন্ধে গণটিকা দেয়ার মাধ্যমে কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট সংগ্রহের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা করা হয়েছে। কোভিড ১৯ সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন থাকলে লিখুন নিচে কমেন্ট বক্সে। আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে দ্রুত।
ঢাকাতে আমি গণটিকা নিয়েছি কিন্তু রেজিস্ট্রেশন করার সময় আমার গ্রামের ঠিকানা দিয়েছি এখন আমি কী করবো
ReplyDeleteকেন্দ্র কি দিয়েছেন? আপনি আপনার নিকটস্থ টিকা কেন্দ্রতে যোগাযোগ করুন। তারা টিকা আপডেট করে দিবেন। তাহলেই আপনি কোভিড সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন।
Delete