বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য কয়টি ও রাজ্যসমূহ সম্পর্কে কিছু তথ্য

Nir
0

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য কয়টি
 

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য কয়টি এই প্রশ্নটি বিসিএস থেকে শুরু করে সব ধরনের চাকরি প্রার্থীদের কিংবা ভাইভা পরিক্ষায় আসে। অনেকেরই অজানা থাকার দরুন এই প্রশ্নটির উত্তর অনেকেই দিতে সক্ষম হয়না। আজকে আমরা এই নিবন্ধে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য কয়টি এবং রাজ্যসমূহ সম্পর্কে সংক্ষেপে জানবো।


বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য কয়টি

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য মোটে ৫টি। রাজ্যসমূহ হলো; পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও মিজোরাম।

  1. পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) 
  2. আসাম (Assam)
  3. ত্রিপুরা (Tripura)
  4. মেঘালয় (Meghalaya)
  5. মিজোরাম (Mizoram)

মোটে এই ৫টি রাজ্য বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য। 


বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য

আমরা এই নিবন্ধে ইতোমধ্যে জেনেছি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য কয়টি এবং কি কি। এখন আমরা জানবো বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্যগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু তথ্য। 

 

পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)

পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) হলো একটি পূর্ব ভারতের রাজ্য। এটি পূর্ব ভারতের বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে একদম কোলঘেসে অবস্থিত। একসময় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি ছিলো বাংলাদেশের অংশ। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় ধর্মের ভিত্তিতে এই অঞ্চল দ্বিখণ্ডিত হয়, পরিণত হয় ভারতের অংশে। পশ্চিমবঙ্গের জনগণ সংখ্যাগরিষ্ট হিন্দু এবং পূর্ব বাংলার মানুষ সর্বাধিক মুসলিম হওয়ার দরুন ব্রিটিশরা পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের অংশে পরিণত করে। 


১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ পূর্ব ভারতের একটি রাজ্যে পরিণত হয়। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট সরকার পশ্চিমবঙ্গ শাসন করেছিল। বিশ্বের ইতিহাসে এই সরকারটিই ছিল সর্বাধিক দীর্ঘস্থায়ী নির্বাচিত কমিউনিস্ট সরকার। পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ভাষা বাংলা।

 

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মোট আয়তন ৮৮,৭৫২ বর্গকিমি বা ৩৪,২৬৭ বর্গমাইল এবং ২০২৩ এর জনসংখ্যা জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যা ১০,২৫,৫২,৭৮৭। এটি ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনসংখ্যার একটি রাজ্য।


আসাম (Assam)

আসাম উত্তর-পূর্ব ভারতের বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য। আসাম রাজ্যটি চা এবং বিভিন্ন প্রাণীর জন্য সর্বাধিক পরিচিত। বিশেষকরে আসামের চা সমগ্র বিশ্বে পরিচিত। আর তাই আসামের নামেই চায়ের বৈজ্ঞানিক নামকরণ করা হয়। চায়ের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া আসামিকা (Camellia assamica) বা ক্যামেলিয়া সিনেসিস ভার আসামিকা (Camellia sinensis var. assamica) 

 

রাজ্যটি ভারতের রাজ্যে পরিণত হয় ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সালে। আসামের রাজধানী দিসপুর এবং বৃহত্তম শহর গুয়াহাটি। আসামের আয়তন ২,৪০,১১৮ বর্গকিলোমিটার বা ৯২,৭১০ বর্গমাইল এবং এর মোট জনসংখ্যা ৩,২৯,০০,০০০। আসামের সরকারি ভাষা অসমীয়া এবং আসামের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ হলো বাঙ্গালী। 


ত্রিপুরা (Tripura)

ত্রিপুরা হলো একটি উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য। এটি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য। ত্রিপুরা ভারতের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য। এই রাজ্যের উত্তর, দক্ষিণ এবং পশ্চিম দিকে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। বাংলাদেশের সীমান্তের একদম কোলঘেসে এই রাজ্যের অবস্থান। 


ত্রিপুরার প্রধান সরকারি ভাষা বাংলা। তবে এর পাশপাশি ককবরক নামের একটি ভাষা যা ত্রিপুরা জাতির মাতৃভাষা নামে পরিচিত এই ভাষাটিও ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি ভাষায় অন্তর্ভূক্ত। তবে এই ভাষায় কথা বলে একেবারেই কম। 


১৯৪৭ এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যটি ছিলো বাংলাদেশের অংশ। তখন বাংলাদেশের নাম ছিলো বঙ্গদেশ। পরবর্তীতে ভারত বিভাজনের পর ত্রিপুরা রাজ্যটি ভারতের অংশে পরিণত করে দেয়া হয় ধর্মের ভিত্তিতে এবং ১ জানুয়ারি ১৯৫৬ সালে ত্রিপুরা একটি কেন্দ্রশাসিত এবং ২১ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে ত্রিপুরা একটি পূর্ণাঙ্গ রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। 


ত্রিপুরা রাজ্যের মোট আয়তন ১০,৪৯১.৬৯ বর্গকিমি বা ৪,০৫০.৮৬ বর্গমাইল। ২০২৩ সাল অনুযায়ী এই রাজ্যের মোট জেলা সংখ্যা ৮টি। এই রাজ্যের মোট জনসংখ্যা ৩৬,৭১,০৩২। আগরতলা হলো ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী। 


মেঘালয় (Meghalaya)

মেঘালয় হলো উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য। এটি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য। মেঘালয় রাজ্যটি পূর্বে ছিলো আসামের রাজ্যের অংশ। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ২১ জানুয়ারি খাসি, গারো এবং জৈন্তিয়া হিলস জেলাগুলি নিয়ে মেঘালয়ের নতুন রাজ্য গড়ে ওঠে। বর্তমানে মেঘালয়ের মোট জেলা ১৩টি। 


মেঘা শব্দের অর্থ মেঘ এবং আলয় অর্থ আবাস অর্থাৎ মেঘালয় অর্থ মেঘের আবাস। মেঘালয়ের সমগ্র অংশ পাহাড়ি এবং মেঘেদের আবাস হওয়ার দরুন এই রাজ্যের নামকরণ করা হয় মেঘালয়। এই রাজ্যের ৭০ ভাগ অংশই বনভূমি। 

 

মেঘালয়ের রাজধানী শিলং। মেঘালয় রাজ্যের সরকারি ভাষা ইংরেজি, খাসি ও গাড়ো। এর মোট আয়তন ২২,৪২৯ বর্গকিমি বা ৮,৬৬০ বর্গমাইল এবং ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী এই রাজ্যের মোট জনসংখ্যা ছিলো ২৯,৬৪,০০৭ জন।

 

মিজোরাম (Mizoram)

মিজোরাম হলো উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য। এটি বাংলাদেশের একদম কোলঘেসে সীমান্তবর্তী পাহাড়ঘেসা একটি রাজ্য। এই রাজ্যটির সম্পূর্ণ অংশটিই পাহাড়ি। মিজোরাম রাজ্যটির নামের উতপত্তি মি অর্থ জাতি, জো পাহাড় এবং রাম ভূমি এই তিনটি শব্দ থেকে যার পূর্ণ অর্থ পাহাড়ি জাতির ভূমি। 

 

মিজোরাম রাজ্যের রাজধানী আইজল। এই রাজ্যের মোট জেলা সংখ্যা সংখ্যা ১১টি। এবং মোট আয়তন ২১,০৮৭ বর্গকিমি বা ৮,১৪২ বর্গমাইল এবং মোট জনসংখ্যা ১০,৯১,০১৪ জন। ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ মিজোরাম রাজ্যটি গঠিত হয়। 

 

পরিশিষ্ঠ 

আশাকরি আমরা এই নিবন্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্য কয়টি এবং এই রাজ্যসমূহ সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু তথ্য জানতে সক্ষম হয়েছি। 


আরও পড়ুন

আফ্রিকার মুসলিম দেশ কয়টি? আফ্রিকা মহাদেশের মুসলিম দেশগুলোর নাম

প্লুটো গ্রহ নয় কেন

Post a Comment

0Comments

এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!